সরকারি খরচে হজ, যা জানালেন ধর্ম উপদেষ্টা

সরকারি খরচে হজের বিষয়ে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। সম্প্রতি যুগান্তরকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।

আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে অনেকের ভুল ধারণা আছে যে হাজিদের থেকে টাকা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের লোকেরা হজ করে আসে। আমি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই যে, হাজিদের থেকে এক পয়সাও মন্ত্রণালয় নেয় না। হাজিদের টাকা যদি আত্মসাৎ হয় সেটা করে এজেন্সিগুলো। আমরা বলেছি যে এজেন্সিরা হাজিদের সঙ্গে চুক্তি করবে। কতটুকু দূরত্বে রাখবে বা কি মানের খাবার দেবে এসব আগেই চুক্তি হবে। চুক্তি না করলে তো সেটি হাজি সাহেবের দোষ।

হজের সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাজের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি সব হাজিদের জন্য আমরা ১ কোটি টাকার ওষুধ ও ২০০ ডাক্তার-নার্স-টেকনিশিয়ান নিয়ে যাই। যার মধ্যে ৮০ জন থাকে এমবিবিএস ডাক্তার। এগুলোর খরচ কিন্তু মন্ত্রণালয় বহন করে। হাজিদের টাকা থেকে নয়। আমরা সেখানে মেডিকেল সুবিধা ও মেডিসিন দিয়ে থাকি। কেউ যদি অসুস্থ হয় তাকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়। হাজিদের থেকে এসবের জন্য এক পয়সাও নেওয়া হয়না। হজে অনেকে হারিয়ে যায় তাদের খুঁজে আনার দায়িত্বও আমাদের। কেউ মারা গেলে তাকে কবর দিতে হয়। ইচ্ছা করলেই কিন্তু সেখানে আপনি কবরস্থ করতে পারবেন না। এটা সৌদি সরকারকে জানিয়ে তাদের ব্যবস্থাপনায় করতে হয়। এসব কাজে তো আমাদের লোকবল লাগে। তাই মন্ত্রণালয় থেকে বিশাল এক দল নিতে হয়। অনেক বৃদ্ধ হাজিরা টাকা হারিয়ে ফেলে তাদেরকে মন্ত্রণালয় থেকে টাকা দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে ঘরভাড়া কমে যাওয়ার কারণে ২৩ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত ফেরত দেওয়া হয়েছে।

ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, হজ নিয়ে মন্ত্রণালয় ব্যবসা করে না বরং সেবা দেয়। অনেকের ধারণা হাজিদের টাকা নিয়ে আমরা হজ করি, আসলে এটা ভুল ধারণা। এটা মন্ত্রণালয়ের টাকা। টাকা যেহেতু সরকারের তো সরকার চাইলেই মানুষের সংখ্যা কমাতে বা বাড়াতে পারে। এ ব্যাপারে ফতোয়াও আছে যে, রাষ্ট্র যদি ইচ্ছা করে তাহলে যেকোনো মানুষকে হজে পাঠাতে পারে। সম্প্রতি আমি হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে এ ফতোয়া নিয়ে এসেছি। তবে এবার আগের মত বেশি মানুষও যাবেনা। আমরা মন্ত্রণালয়ের খরচ সীমিত করে ফেলব। আর এ খাতে তো হাজিদের টাকা তো ব্যবহারই হয় না।