যশোর রেলস্টেশনে চাঞ্চল্যকর জুম্মান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী রুবেল ওরফে কপালকাটা রুবেল র্যাব গ্রেফতার করেছে। র্যাব-৬, সিপিসি-৩, যশোর ক্যাম্পের একদল চৌকষ ফোর্স সদরের কোল্ডস্টোরেজ মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন। তার বিরুদ্ধে জুম্মান হত্যাকা- ছাড়াও একটি হত্যার চেষ্টা ও দুটি মাদক মামলা রয়েছে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে পৌনে ৩টার দিকে গোয়েন্দা সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে র্যাব সদস্যরা আলোচিত সন্ত্রাসী রুবেল ওরফে কপালকাটা রুবেলকে গ্রেফতার করেন। তিনি আশ্রম রোড এলাকার তরিকুল ইসলামের ছেলে। গ্রেফতার রুবেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুম্মান হত্যাকা-ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব সূত্র জানায়, ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা আনুমানিক সোয়া ৬টার দিকে একদল সন্ত্রাসী জুম্মান (৩৪) নামে এক যুবককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে জখম করে ফেলে রেখে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নৃশংস এই হত্যাকা-টি যশোর শহরের জনবহুল একটি স্থানে ঘটায় জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। র্যাব-৬ এর সদস্যরা খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায় এবং সিসিটিভি ফুটেজে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার অভিযান শুরু করে। তবে খুনিরা আত্মগোপনে থাকায় জড়িত সবাইকে এতদিন গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। র্যাব সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পায়, যশোর রেলষ্টেশনের ২নং প্লাটফরমের সামনে ভিকটিম জুম্মানকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েকজন সন্ত্রাসী এলোপাতাড়ি ছূরিকাঘাত করছে। হত্যাকান্ডের পর ভিকটিমের ভাই ১১ ফেব্রুয়ারি খুলনা রেলওয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর হত্যাকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের একাধিক আভিযানিক দল মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) আসামি রুবেলকে গ্রেফতারের পর আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য খুলনা রেলওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, নিহতের ভাই মামুন হোসেন জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের শংকরপুর রেলস্টেশন এলাকায় দুর্বৃত্তরা জুম্মানকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করে। পরে ঘটনায় জড়িতরা বুঝতে পারে জুম্মানের মৃত্যু হয়নি। সেকারণে তারা হাসপাতালে আনার কথা বলে একটি ইজিবাইকে তুলে নেয় কিন্তু যশোর জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছাতে ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা না কিন্তু জুম্মানকে প্রায় এক ঘন্টা পর হাসপাতালে আনে হত্যায় জড়িতরা। তার সন্দেহ ইজিবাইকের ভেতর শ্বাসরোধে জুম্মানের মৃত্যু নিশ্চিত করে খুনিরা হাসপাতালে পাঠায়। খুনিরা জুম্মানের ঘনিষ্ট ছিল। যেকারণে প্রথম অবস্থায় তাদের সন্দেহ করা যায়নি। কিন্তু পরে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়-যারা জুম্মানকে কুপিয়েছিল, তারাই হাসপাতালে আনার নামে ইজিবাইকে তুলে নেয় এবং পথেই তার মৃত্যু নিশ্চিত করে হাসপাতালে নেয়। তিনি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।