বাংলাদেশের জার্সিটা সবশেষ গায়ে চড়িয়েছেন সেই গেল অক্টোবরে। এরপর একে একে অনেক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, কিন্তু সাকিব আল হাসানের দেখা মেলেনি। এরপর যখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও খেলা হলো না তার, তখন মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে ঢোকার দরজাটা সাকিবের জন্য চিরতরে বন্ধই হয়ে গেল বুঝি। তবে সেটা বন্ধ হয়নি, এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান। জানিয়েছেন, ‘সাকিবের জন্য বাংলাদেশের দরজা খোলা’।
গেল সপ্তাহে পাকিস্তান সুপার লিগে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে ৬ মাস পর আবারও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন সাকিব। ক্রিকেট থেকে সাকিবের এমন দীর্ঘ বিরতির কারণ অবশ্য ছিল তার অবৈধ বোলিং অ্যাকশন। সে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তিনি ফেরেন জানুয়ারি মাসে। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তার বোলিং অ্যাকশন বৈধ ঘোষণা করে।
তার আগে সাকিব জানিয়েছিলেন দেশের মাটিতে বিদায়ী টেস্টটা খেলতে চান। তবে সেই বিদায়ী টেস্টও খেলা হয়নি। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেই সিরিজ থেকে নাম সরিয়ে নিতে হয় তাকে। সাকিব ছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। গত ৫ আগস্ট দলটি ১৫ বছর পর ক্ষমতা হারায়। তারপর থেকে জনরোষের শঙ্কায় সাকিব দেশে ফেরেননি। বিসিবিও তাকে পরের কোনো সিরিজে রাখেনি। এমনকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলেও ছিলেন না তিনি।
তবে সাকিবকে পুরোপুরি বাদ দেয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বোর্ড পরিচালক ইফতেখার রহমান বলেন, ‘সাকিব সবসময় নির্বাচকদের ও টিম ম্যানেজমেন্টের বিবেচনায় থাকবে। ও যেকোনো দলের জন্য সম্পদ। ও একজন বিশ্বমানের ক্রিকেটার। ও এখনই ফিরেছে, বোলিং অ্যাকশন ঠিক করে। আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট ওকে নজরে রাখবে। ওর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক একেবারেই শেষ নয়। নিষেধাজ্ঞার পর ও খুব অল্প ম্যাচ খেলেছে। আরও কিছু ম্যাচ খেলুক, তারপর আমরা বলতে পারব ওর ফেরা নিয়ে।’
পিএসএলে তিনি তিনটি ম্যাচ খেলেন। ব্যাট হাতে দুই ইনিংসে দুইবারই শূন্য রান করেন। বল হাতে একটি উইকেট পান।
বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক বাজে পারফরম্যান্সের কারণে সাকিবকে নিয়ে আবার আলোচনা শুরু হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। এরপর পাকিস্তান সফরেও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে দল।
ইফতেখার রহমান বলেন, ‘সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ—এই চার সিনিয়র খেলোয়াড় ছাড়া দলটা এখন একদম নতুন। একটা ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে। আমার মনে হয়, এখনকার খেলোয়াড়দের মাঝে প্রতিভা আছে, কিন্তু ওরা প্রয়োগ করতে পারছে না। আমি আগেও বলেছি, যত বেশি খেলবে, তত ভালো করবে। এখন যে অবস্থায় আমরা আছি, এখান থেকে উপরের দিকেই যাওয়ার সুযোগ আছে।’
তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ সব ফরম্যাট থেকে বিদায় নিয়েছেন। মুশফিকুর রহিম এখন শুধু টেস্ট খেলেন। সাকিব আনুষ্ঠানিকভাবে কেবল টি-টোয়েন্টি ছাড়ার কথা বলেছেন। ওয়ানডে থেকে এখনও অবসর নেননি। এবার বিসিবি কর্তার এমন কথার পর সাকিব আবার বাংলাদেশ দলে ফেরার আশা করতেই পারেন।