নিজেদের প্রস্তাবের বাইরেও অনেক বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

বিএনপি নিজেদের সংস্কার প্রস্তাবের বাইরেও অনেক প্রস্তাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের সংলাপ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, অনেক প্রস্তাবের সঙ্গে আমরা নীতিগতভাবে একমত হয়েছি, আবার কিছু বিষয়ে আংশিকভাবে একমত হয়েছি।

অন্যদের প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপির একমত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কমিশনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জুডিসিয়ারি, ম্যাজিস্ট্রেসি, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ বহু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, যেগুলো আমাদের প্রস্তাবে ছিল না।

প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ইস্যুতে বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান সংবিধানে রাষ্ট্রপতির হাতে এই ক্ষমতা রয়েছে। ফলে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিককে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

আমরা মনে করি, এটি থাকা উচিত নয়।

তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত ও যোগ্যতা নির্ধারণ করে রাষ্ট্রপতিকে সে অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।

এ বিষয়ে আমরা একটি সীমারেখা নির্ধারণের পক্ষে।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আমাদের ৩১ দফা প্রস্তাবে এই ধারণা দিয়েছি। উচ্চ কক্ষের আসন সংখ্যা ১০০ এবং তার নাম ‘সিনেট’ প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল আমাদের এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। তবে কিছু রাজনৈতিক দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে, যদিও সংখ্যায় তারা কম।

এর আগে বৈঠকের মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, আস্থা ভোট ও অর্থ বিল ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন। এ বিষয়ে সকল দলের মধ্যে একটি সার্বিক ঐকমত্য হয়েছে।

সংবিধান সংশোধনী বিলের সঙ্গে কয়েকটি দল তাদের নিজ নিজ অবস্থান যুক্ত করেছে জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, আমাদের পক্ষ থেকেও লিখিত প্রস্তাবে উল্লেখ করেছি, জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় যেমন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সংসদ সদস্যরা স্বাধীন থাকবেন না, এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আস্থা ভোট ও অর্থ বিল জাতীয় সনদে উল্লেখ থাকবে এবং এতে সবাই স্বাক্ষর করবেন। বাকি দুই বিষয়ে আমাদের অবস্থান সংযুক্ত থাকবে এবং আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তা অন্তর্ভুক্ত করব।

সংসদের স্থায়ী কমিটিতে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়েও অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমদ।

পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, ইস্টিমেশন কমিটি এবং পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটিগুলোয় সভাপতির পদ আসনের ভিত্তিতে বিরোধী দল পাবে এ নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গেছে বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য।

নারীদের জন্য সংরক্ষিত ১০০ আসনের প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই প্রস্তাবে সবাই একমত হয়েছে। তবে কোন পদ্ধতিতে এই আসন রাখা হবে, সে বিষয়ে আজকের আলোচনায় একমত হওয়া যায়নি।