মৃত্যু নিশ্চিত করে রক্তমাখা ছুরি পুকুরে ফেলে আসামিরা

চট্টগ্রাম: নিজের সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা সজল নন্দীর গলায় আঘাত করে হত্যা করা হয় বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে মামলার অভিযুক্ত আসামি জয় বড়ুয়া চৌধুরী। আঘাতের পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ফ্লোরে পড়ে যান সজল নন্দী। এসময় সজলকে তিনজনে ধাক্কাতে ধাক্কাতে রান্নাঘরের দিকে নিয়ে যায়। পরে তিনি হাত-পা ছুড়ে গোঙাতে থাকলে জিকু রায় চৌধুরী পুরনো একটি কাপড় দিয়ে সজল নন্দীর হাত-পা বাঁধে। একসময় নিথর হয়ে আসে তার দেহ। পরে টাকা চুরি করার উদ্দেশ্যে চাবি খুঁজে পেলেও আলমিরা খুলতে না পেরে সজলের বাসায় রক্তমাখা ছুরি ধুয়ে পরিষ্কার করে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর জয় এবং প্রতীক সেই ছুরি হালিশহর মাইলের মাথা এলাকার শামসুল হকের পুকুরে ফেলে দেয়।

চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তা সজল নন্দী হত্যা মামলায় গ্রেফতার তিন কিশোর প্রতীক মজুমদার, জিকু রায় চৌধুরী এবং জয় বড়ুয়া চৌধুরী শুক্রবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-ইমরান খানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে নৃশংসতার এই বর্ণনা দেয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মে সজল হত্যাকাণ্ডের পর ৩০ মে রাতে নগরের ইপিজেড এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বন্দর থানা এলাকার শামসুল হকের পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা।

আদালত সূত্র জানায়, প্রতীক, জিকু এবং জয় আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, সজল নন্দীর ছেলে সৈকত নন্দীর ব্যবহৃত একটি সাইকেল কেনার কথা ছিল জিকুর। প্রতীক সেই সাইকেল বেচাকেনার মধ্যস্থতা করছিল। সেদিন সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তারা তিনজন সজল নন্দীর বাসায় যায়। পরে সজল নন্দী তাদের তিনজনকেই চা ও বিস্কুট খেতে দেয়।

জয়ের ভাষ্যে, সাইকেলের দাম নিয়ে তাদের সঙ্গে সজল নন্দী খারাপ ব্যবহার করেন। সজল সাইকেলের দাম হাঁকেন ৯ হাজার ৫০০ টাকা, কিন্তু জিকু জানায় ৫ হাজার টাকা দিতে পারবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সজল নন্দী একপর্যায়ে জিকুকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে চান। এর পরপরই সজল নন্দীর গলায় ছুরি চালিয়ে দেয় জয়। তার হাত-পা বেঁধে মৃত্যু নিশ্চিত করে জিকু। জয় বড়ুয়া তার জবানবন্দিতে জানায়, দুই মাস আগে নগরীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি কেনা হয়।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, সজল নন্দীর বাসায় ২৯ লাখ টাকা লুটের উদ্দেশ্যে গিয়ে তাকে বাসার ভেতর গলা কেটে খুন করে গ্রেফতারকৃতরা।