এশিয়া কাপ জিতে মেয়েদের ইতিহাস

স্পোর্টস ডেস্ক: ক্রিকেটে যেকোন ধরনের ফাইনাল ম্যাচ মানেই এতদিন ভয়ঙ্কর এক ‘দুঃস্বপ্ন’ হয়ে ছিল বাংলাদেশের জন্য। তবে রোববার প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলতে নেমেই সেই দুঃখ মুছে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ভারতকে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ৩ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা উল্লাসে মেতেছে সালমা-রুমানারা।

শেষ বলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ২ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। ব্যাটিংয়ে ছিলেন জাহানারা আলম। এমন নাটকীয় ম্যাচে সে সময় হারমানপ্রিতের বল সীমানার পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় রান তুলে প্রথমবার এশিয়া কাপে জিতে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয় টাইগ্রেসরা।

কুয়ালালামপুরের কিনরারা একাডেমি ওভাল মাঠে এশিয়া কাপের ফাইনালে রোববার বল হাতে ৯ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে ১১২ রানে আঁটকে দেয় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৩ উইকেট হাতে রেখে শেষ বলে জিতে যায় টাইগ্রেসরা। সঙ্গে সঙ্গে শিরোপা উল্লাসে মেতে উঠে সালমাবাহিনী।

বাংলাদেশের হয়ে নিগার সুলতানা সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন। রুমানার ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান। আয়েশা ১৭, শামিমা ১৬ ও ফারজানা করেন ১১ রান।

সহজ লক্ষ্য ছুঁতে শুরুটা দারুণ করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার আয়েশা রহমান (২৩ বলে ১৭) ও শামিমা সুলতানা (১৯ বলে ১৬)। ৬.৫ ওভারে দলীয় স্কোর বোর্ডে তারা তোলেন ৩৫ রান। এরপরই পোনাম যাদবের ঘর্ণিতে পরপর দুই বলে দুই ওপেনারই সাজঘরে ফিরে যান। তাতে বিপদে পড়ে টিম টাইগার্স। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ফারজানা হক ও নিগার সুলতানা।

শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই ভারতীয় ওপেনার স্মৃতি মন্দনাকে(৭) রান আউটের ফাঁদে ফেলেন সালমা। সপ্তম ওভারে দীপ্তি শর্মাকে (৪) সরাসরি বোল্ড করেন জাহানারা। এরপর ৬ রানের ব্যবধানে প্রতিপক্ষের আরও দুই উইকেট তুলে নেয় টাইগ্রেসরা।

দীপ্তি ফিরে যাওয়ার পরের ওভারেই ওপেনার মিতালি রাজকে (১১) তুলে ফারজানার ক্যাচে ফেরান খাদিজা। নবম ওভারে আনজুয়া পাতিল (৩) আউট হয়েছেন নিজের কারণেই। ৮.২ ওভারে রান নিতে গিয়ে নিজের প্রান্তে ফেরার সময় উইকেটরক্ষকের থ্রো দেখে তিনি উইকেট ঢেকে দৌড়ান। সালমারা ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউটের আবেদন করলেও মাঠের আম্পায়ার তাতে কর্ণপাত করেননি। কিন্তু থার্ড আম্পায়ার আউট ঘোষণা করেন। ১৩তম ওভারে ভেদা কৃঞ্চমূর্তিকেও বোল্ড করেন সালমা।

বাংলাদেশের জন্য অবশ্য বিপদের কারণ হয়ে ছিলেন ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউর। অষ্টম উইকেটে এ ডানহাতি জুলআন গৌ স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে টাইগ্রেসদের উপর চড়াও হন। দলীয় স্কোরকে ৭ উইকেটে ৭৪ থেকে তিনি নেয় ১০৭-এ। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের শেষ ওভারে খাদিজাতুল কুবরার শেষ বলে জাহানারার ক্যাচে ফেরেন হারমানপ্রিত (৪২ বলে ৫৬)। এরমাঝে ইনিংসের ১৫তম ওভারে ২ উইকেট তুলে নেন রুমানা আহমেদ। দ্বিতীয় বলে তাকে ডাউন দ্য উইকেট এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তানিয়া ভাটিয়া। তিন বল পর শিখা পাণ্ডেকে শামীমা সুলতানার ক্যাচে সাজঘরে পথ দেখান রুমানা।

বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ২২ রানে ২ উইকেট নেন রুমানা। খাদিজাতুল কুবরা ২ উইকেট দখলে নিয়েছেন ২৩ রানে। ১টি করে উইকেট পকেটে পুরেছেন সালমা ও জাহানারা।