স্পোর্টস ডেস্ক: ২০১৬ সালের ইউরোতে সবাইকে চমকে দেন অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান। পায়ের সুনিপুণ জাদুতে সাত ম্যাচে ছয় গোলের সঙ্গে দুই অ্যাসিস্ট। সেই গ্রিজম্যানকে রাশিয়া বিশ্বকাপে যেন পুরনো রূপে এখনও পাওয়াই গেল না। পাওয়া গেল না তার নাচটাও। তবে কি ফাইনালের জন্য গোল উদযাপনের নাচটা তুলে রেখেছেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড?
বিশ্বকাপের আগেও ফুটবলবোদ্ধাদের শত আলোচনার নামটি ছিল গ্রিজম্যান। কিলিয়ান এমবাপ্পেকে তখন অনেকটা গোনার বাইরে। অথচ ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে’ দেখা গেল মুদ্রার উল্টোপিঠ। এমবাপ্পে যেভাবে ছুটছেন, গ্রিজম্যান তার থেকে কিছুটা পেছনে। অবশ্য তিন গোল আর দুই অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বলের অন্যতম দাবিদার গ্রিজম্যান ! তবে এখন পর্যন্ত প্রত্যাশা মতো খেলতে পারেননি অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের তারকা এ খেলোয়াড়। ছয় ম্যাচে ৪৮২ মিনিট মাঠে থেকে পেয়েছেন তিন গোলের দেখা, যার মধ্যে দুটিই এসেছে পেনাল্টি থেকে।
গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের ৫৮তম মিনিটে প্রথম গোলটি করেন। এর পর নকআউট পর্বে আর্জেন্টিনার সঙ্গেও স্পটকিকে গোল পেয়ে যান। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের গোলরক্ষক মুসলেরা ভুলের ফাঁদে পা না ফেললে হয়তো গ্রিজম্যানের নামের পাশে দুই গোলই জমা থাকত।
নিঝনি নোভগোরদে সেদিন লুইস সুয়ারেজ-দিয়েগো গডিনদের বিপক্ষে দূরপাল্লার শটে প্রতিপক্ষ গোলকিপারকে পরাস্ত করেন ফ্রান্স তারকা। যেটাকে, অনেকটা আত্মঘাতীর মতো গোল বলা যায়। এমন সাদামাটা পারফর্ম গ্রিজম্যানের সঙ্গে মানায়? উত্তরটা হয়তো তিনিও জানেন না।
তবে কথাবার্তায় মনে হয়েছে, সেরাটা ফাইনালের জন্য তুলে রেখেছেন তিনি। এমন কিছু হলে দিদিয়ের দেশমের হাসিটা আরও চওড়া হওয়ারই কথা। গত মঙ্গলবার স্যামুয়েল উমতিতির একমাত্র গোলে বেলজিয়ামকে হারায় ফ্রান্স। ম্যাচের পর দলের অন্যতম তারকা খেলোয়াড় বলেছেন, ‘স্বপ্নটা এখনও পূরণ হয়নি, যার জন্য এতটা পথ আসা। তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে চাই। আমি মনে করি, শিরোপা জেতার এবারই দারুণ সময়। আসলে দিনশেষে জয়টা আমাদেরই প্রাপ্য।’
১৯৯৮ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফ্রান্স। সেই থেকে কেটে গেছে কুড়ি বছর। হাতে ওঠেনি তেমন কোনো বড়সড় সাফল্য। এবার তরুণ দল নিয়ে রাশিয়ার এক একটি সিঁড়ি অতিক্রম করছে ফরাসিরা। মূল লক্ষ্য আরেকটা শিরোপা, ‘আমরা একটা ট্রফির সৌরভ নিয়ে থাকতে চাই না। সংখ্যাটা দুয়ের ঘরে নিতে চাই এবার।’
রোববার মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে ফ্রান্স। তার আগে হাতে আছে অঢেল সময়। এ সময়ে নিজেদের আরও ভালোভাবে তৈরি করতে চাচ্ছেন গ্রিজম্যানরা, ‘আমরা এখন বিশ্রাম নেব। এরপর প্রস্তুতি। আসলে ফাইনালে উঠে গেলেও পা মাটিতেই আছে আমাদের। কারণ, ফাইনালটা মোটেও সহজ হবে না।’
অ্যাথলেটিকোর হয়ে ফাইনাল খেলতে নেমে বুঝেছেন শিরোপা না পাওয়ার জ্বালাটা। ইউরোতে ব্যর্থ হওয়ার পর চোখের সামনে দেখেছেন নিজ দেশের কান্না। এবার সেটার পুনরাবৃত্তি হোক, নিশ্চয় তা না চাওয়ারই কথা গ্রিজম্যানের।