গাইবান্ধায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

গাইবান্ধায় সরকারি কোন বালুমহাল না থাকায় নদ-নদী ও ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেই সকল কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে যেমন নদ-নদীগুলোতে ভাঙন দেখা দিচ্ছে তেমনি ফসলি জমি ভেঙে পড়ছে বালু উত্তোলনের গর্তে। এতে করে একদিকে যেমন মানুষ নদীতে সহায়-সম্বল হারিয়ে আশ্রয়হীন হচ্ছে অপরদিকে তেমনি দিন দিন ফসলি জমির পরিমাণও কমে যাচ্ছে।

এ ছাড়া বালুমহাল না থাকায় সরকারও প্রতি বছর কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিকে ইতোপূর্বে বালু উত্তোলন করার গর্তে ডুবে তিনজন শিশুর প্রানহানীর ঘটনা ঘটেছে।

বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, ভবন, রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ, নিচু জমি ও গর্ত ভরাট করাসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কাজে বালু প্রয়োজন পড়ে। বর্তমানে জেলায় সরকারি কোন বালুমহাল না থাকায় ফসলি জমি, পুকুর, ব্রহ্মপুত্র নদ, তিস্তা, যমুনা, করতোয়া, বাঙালী, ঘাঘট, আলাই ও মানস নদীসহ যত্রতত্র বিভিন্নস্থান থেকে বালু উত্তোলন করেই এসব উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। সব কাজ ঠিকমতো হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সরকারিভাবে বালুমহাল না থাকায় সরকার শুধু রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের মথরপাড়া গ্রামে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। আশেপাশের জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকা থাকায় বারবার নিষেধ করা সত্বেও বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়নি। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাখালবুরুজ ইউনিয়নের কাজীপাড়া ও হরিনাথপুর বিশপুকুর এবং মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের চরবালুয়া গ্রামে কাটাখালি নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে পাঁচটি শ্যালোইঞ্জিনচালিত মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়েছে।

বছরের পর বছর ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই বালু উত্তোলনের ধারাবাহিকতা চলছেই। আর এসব কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন প্রভাবশালী দলের নেতা, এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, ঠিকাদারসহ জনপ্রতিনিধি ও তাদের আত্মীয়রা।

এব্যাপারে জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, গাইবান্ধায় বালুমহাল চালু করার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। আইনগত কিছু বিষয় আছে, সেটা মেনে বালুমহাল চালু করার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া যারা বিধিবহির্ভুতভাবে বালু উত্তোলন করছে আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে সেটা বন্ধ করছি।