নেত্রকোনায় শোক দিবস নিয়ে আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২০

নেত্রকোনার পূর্বধলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে পাশাপাশি সমাবেশ করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ধাওয়-পাল্টাধাওয়ায় পুলিশ সাংবাদিকসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আহতরা হলেন, এনটিভির সাংবাদিক ভজন দাস, ভোরের কাগজের পূর্বধলার প্রতিনিধি তিলক রায় টুলু, পুলিশের এসআই শুভাশীষসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ২০ জন।

বুধবার এমপি বেলাল সমর্থকরা পূর্বধলা মধ্যবাজারের উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে প্যান্ডেল তৈরি করে সমাবেশের আয়োজন করে। অপর দিকে আহমদ হোসেন সমর্থকরা ২০০ গজ দূরে তাদের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে মঞ্চ তৈরি করে সমাবেশের আয়োজন করে। পাশাপাশি দুই গ্রুপের সমাবেশকে কেন্দ্র করে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করায় আগে থেকেই বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

দুপুরে পাশাপাশি দুটি মঞ্চ থেকে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়ার জেরে এরশাদ হোসেন মালু ও জাহিদুল ইসলাম সুজনের কর্মী-সমর্থকরা বেলাল গ্রুপের মঞ্চের দিকে তেড়ে আসলে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।

এ সময় সাধারণ সম্পাদকের মঞ্চসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৮/১০ রাউন্ড টিয়ার শেল ছোড়ে। এ সময় আশপাশের দোকানপাট ও পথচারীরা প্রাণ ভয়ে দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করতে দেখা যায়।

পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল আমাদের প্রিয় নেতা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন সম্পর্কে বিষোধগার করে বক্তব্য রাখায় আমাদের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কলেজছাত্রলীগের সহসভাপতি স্বপন চন্দ্র দাস, উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. লাক মিয়া ও যুবলীগ নেতা দৌলতসহ ৮ জন আহত হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বলেন, আমাদের সমাবেশে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক লোকজনের গণজমায়েত দেখে তারা হামলা চালিয়েছে। এতে ৬ মহিলাসহ ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

পূর্বধলা থানার ওসি মো. বিল্লাল উদ্দিন দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া কথা স্বীকার করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৮ রাউন্ড টিয়ার শেল ছোড়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অপরদিকে পূর্বধলায় উপজেলা পরিষদ সড়কের পাশে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান শোক দিবস পালন করেন।

প্রসঙ্গত, পূর্বধলায় দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের (বীরপ্রতীক) সমর্থক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ হোসেন মালু ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজনের নেতৃত্বাধীন গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। দুটি গ্রুপই জাতীয় দিবস দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচি পৃথক পৃথকভাবে পালন করে আসছে।