প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

আর মাত্র দুইদিন পরই ঈদুল আজহা। মুসলমানদের দ্বারে ত্যাগ ও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব কোরবানি ঈদ। এইদিনে ধনী, গরীব ভেদাভেদ ভুলে ঈদের নামাজে এক কাতারে শামিল হয়।

জাতীয় ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে দেশের প্রধান ঈদ জামাত। এখানে একসঙ্গে প্রায় লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করবেন। জাতীয় ঈদগাহে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি ও কূটনীতিকসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে এক কাতারে নামাজ আদায় করবেন। এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।

ঈদুল আজহার নামাজের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হাইকোর্ট সংলগ্ন বিশাল এই জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। রোববার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ জামাতের জন্য সুসজ্জিত করে প্রস্তুত করা হয়েছে ময়দানকে। ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ হাজার বাঁশ দিয়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বৃষ্টিতে যাতে সমস্যা না হয়, সেজন্য ওপরে দেওয়া হয়েছে মোটা ত্রিপলের ছাউনি। পানি নিষ্কাশনের জন্য রাখা হয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। দৃষ্টিনন্দন করতে আশেপাশের দেয়াল ও গাছগুলোতে রঙ করা হয়েছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স পিয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের ম্যানেজার মোজাম্মেল হক বলেন, জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতিতে সব মিলিয়ে আড়াইশ শ্রমিক কাজ করেন। প্রায় ৫০ হাজারের মতো বাঁশ, ৫০০ মোটা পাইপ ও প্রায় এক লাখের মতো গজারি গাছের কাঠ দিয়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকালকের মধ্যে পুরো ময়দান ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত হবে।

তিনি জানান, অজু করার জন্য পানির ট্যাপ লাগানো হয়েছে। ১৪০ জন মুসল্লি এক সাথে অজু করতে পারবেন এখানে। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট থাকবে ঈদগাহ মাঠে। মাজারের টয়লেট ব্যবহার করবেন ভিআইপিরা। ঈদগাঁহ মাঠে ৭০০ সিলিং ফ্যান, ১০০টি স্ট্যান্ড ফ্যান, ৪৬০টি লাইট এবং ৫৪টি মেটাল লাইট লাগানো হবে। ৬০ থেকে ৭০টি মাইক লাগানো হবে মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে।

মাঠের দক্ষিণপাশে নারীদের ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য পর্দা দিয়ে আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৫ থেকে ৬ হাজার নারী এখানে নামায আদায় করতে পারবেন। কূটনৈতিক মিশনের সদস্য ও তাদের স্ত্রীদের নামাযের জন্যও আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

মুসল্লিদের নিরাপত্তা দিতে মাঠে তৈরি করা হয়েছে র‌্যাব এবং পুলিশের জন্য দুটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। নিরাপত্তার সাথে ঈদগাহ মাঠ ও এর আশপাশে লাগানো হয়েছে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাসহ আধুনিক সরঞ্জামাদি। ঈদগাহ ময়দানের চারপাশজুড়ে সার্বিক নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সিসি ক্যামেরায় থাকবে সার্বক্ষণিক নজরদারি।

ঈদ জামাত প্রস্তুতির ব্যপারে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মহাব্যবস্থাপক খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, জাতীয় ঈদগাহ মাঠের প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার বর্গফুট এলাকা বৃস্টিরোধক ত্রিপল দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে। পুরো মাঠজুড়ে ৭০০ সিলিং ফ্যান ও ১০০টি স্ট্যান্ড ফ্যান লাগানো হয়েছে। একই সাথে ১৪০ জন মুসল্লি অজু করতে পারবেন। এছাড়া একটি ভ্রাম্যমাণ টয়লেটের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।