পশ্চিমবঙ্গে যশোর রোডের গাছ কাটায় আদালতের অনুমতি, ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা

বাংলাদেশের অংশে যশোর রোডের ঐতিহ্যবাহী গাছ কাটায় আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ভারতের অংশে যশোর রোডের দেড় শতাধিক বছরের পুরোনো গাছগুলিকে কাটার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে শুনানীর পর শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া এই রায়ে ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা। গাছ কাটার বিরুদ্ধে আবেদনকারী যশোর রোড গাছ বাঁচাও কমিটি ও এপিডিআরের পক্ষে এই রায়কে জনস্বার্থবিরোধী আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সড়ক সম্প্রসারনের লক্ষ্যে আদালত রাজ্য সরকারকে ৩৫৬টি গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে।

যশোর রোড গাছ বাঁচাও কমিটির সদস্য অনির্বাণ দাস বলেছেন, ঐতিহ্যবাহী গাছগুলিকে বাঁচানোর জন্য ছাত্র-যুবারা যে আন্দোলন করছে তা আরও তীব্র করা হবে। সেই সঙ্গে এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন।

সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পে যশোর রোডের দুপাশে থাকা শতবর্ষ প্রাচীন গাছগুলি কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কিছু গাছ কাটা শুরুও হয়েছিল। তবে গাছ বাঁচাতে গাছকে জড়িয়ে ধরে ছাত্র-যুবরা আন্দোলন শুরু করে। পরে তারা এবং এপিডিআর হাইকোর্টে মামলা করলে আদালত গাছ কাটায় অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সেই স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয়েছে।

যশোর রোড গাছ বাঁচাও কমিটির পক্ষে জানানো হয়েছে, আদালত নিযুক্ত প্রতিনিধিদল যে রিপোর্ট দাখিল করেছিলেন, এদিনের রায় তার সম্পূর্ণ বিপরীত।

জানা গেছে, কমিটি যশোর রোডের দুপাশের গাছগুলিকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করার সুপারিশ করেছিল আদালতের কাছে। কিন্তু আদালত সেই সুপারিশ মানেনি। ঐতিহাসিকদের মতে, যশোরের তৎকালীন জমিদার কালীসাধন পোদ্দার ১৮৪০-৪৪ সাল নাগাদ এই সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। এরপর তিনি সড়কের দু’ধারে সারি সারি গাছ লাগান ছায়ার জন্য। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এই সড়ক বারবার আন্তর্জাতিক সংবাদের শিরোনামে এসেছিল। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী যশোর রোডের মোট দৈর্ঘ্য ১০৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে কলকাতার দমদম পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৭০ কিমি এবং যশোর থেকে বেনাপোল সীমান্ত পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশে এই সড়কের দৈর্ঘ্য ৩৮ কি.মি.৷