প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে লক্ষাধিক লোক সমাগমের প্রস্তুতি বিএনপির

দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাকার জনসভায় লক্ষাধিক লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটি জানা গেছে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৯ আগস্ট রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে জনসভা করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। ওই দিন পুলিশ কমিশনার বিএনপিকে নয়াপল্টনে জনসভা করার মৌখিক অনুমতি দেয় বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে পুলিশের পক্ষ থেকে শর্ত সাপেক্ষে লিখিত অনুমতি পাওয়ার কথা জানান বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

জনসভায় ব্যাপক সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতির কথা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ, সুন্দর ও ভালো জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। জনসভায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটবে।’

দুপুর ২টা থেকে এই জনসভা শুরু হবে বলে এর আগেই জানিয়েছিলেন রিজভী।

দলীয় সূত্র জানায়, দুপুর ২টা থেকে জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও শুক্রবার রাত থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে নেতাকর্মীরা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জনসভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এতে প্রধান অতিথি থাকবেন। জনসভায় জনসমাগম ঘটাতে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা মহানগর নেতাদের পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের জেলার নেতারাও এই জনসভায় অংশ নেবেন।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি খুবই ভালো। বিএনপির যেকোনো কর্মসূচি পালনে ছাত্রদল সবসময় প্রস্তুত থাকে। আর আমাদের নেতাকর্মীরাও সবসময় প্রস্তুত। বিএনপির কোনো কর্মসূচি সফল করার জন্য অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতো আলাদা করে ভাবতে হয় না। বিএনপির যেকোনো কর্মসূচি এমনিতেই জনগণের ঢল নামে।’

সংগঠনটির (ছাত্রদল) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘জনসভা সফল করতে ছাত্রদলের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা, মহানগর এবং এর আওতাধীন সকল ইউনিট ছাড়াও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা এই জনসভায় অংশ নেবে।’

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক দল বরাবরের মতো এবারের জনসভায়ও সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ করবে। ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) হাজিরাগুলো ছাড়াও সব সময়েই স্বেচ্ছাসেবক দল ভূমিকা রাখে এবারও ভালো ভূমিকা থাকবে। ঢাকার পাশের জেলার নেতাকর্মীদের ও অংশ নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

একই ধরনের কথা বলেন জাতীয়তাবাদী যুব দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন মামুন।

জনসভার লোক সমাগম সম্পর্কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার বলেন, ‘আমরা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে আছি। প্রতিদিনই আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারপরও নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনসভায় অংশ নেবে। সাধারণ মানুষ অংশ নেবে। জনসভায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটবে।’

এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল আউয়াল খান বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন। জনপ্রিয়তার শীর্ষ স্থানে দলটির অবস্থান। এ দলের যেকোনো জনসভায় লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম হয়। শুধু সাংগঠনিকভাবেই নয় সাধারণ মানুষের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জনপ্রিয়তা রয়েছে। সাধারণ জনগণ এই জনসভায় যোগ দেবে ইনশাআল্লাহ।’

এদিকে জনসভা শুরুর আগে সকাল ১০টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফাতিহা পাঠ এবং পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন দলটির নেতাকর্মীরা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লন্ডনে নির্বাসিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন।