কেরালায় ‘ইঁদুর জ্বরের’ প্রকোপে ১২ জনের মৃত্যু

অগাস্টের পর থেকে বন্যাক্রান্ত কেরালায় পানিবাহিত রোগ লেপটোস্পাইরোসিসে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

এদের মধ্যে স্থানীয়ভাবে ‘ইঁদুর জ্বর’ নামে পরিচিত এ রোগে শেষ তিনদিনে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে এনডিটিভি।

তবে রোগটি ভারতের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার বাসিন্দাদের কাছে অপরিচিত নয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এ রোগে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু গত মাসের ৮ তারিখ থেকে দেখা দেওয়া ভয়াবহ বন্যার পর রাজ্যটিতে লেপটোস্পাইরোসিসের প্রকোপ বাড়ছে।

অগাস্ট থেকে অন্তত ৩৭২ জন রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ; বন্যার কারণে পানিবাহিত এ রোগে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

আক্রান্ত প্রাণীর প্রস্রাব থেকে মাটির মাধ্যমেও ব্যাকটেরিয়াজনিত এ লেপটোস্পাইরোসিস ছড়াতে পারে। সাধারণত পায়ের পাতার কাটা বা চামড়ার ফাটা অংশ দিয়ে এর ব্যাকটেরিয়াগুলো মানবদেহে প্রবেশ করে। এরপর দেখা দেয় মাথ্যব্যাথা, পেশিতে ব্যাথা, জন্ডিস, ডায়রিয়াসহ নানান উপসর্গ।

“চিকিৎসা না হলে এটি কিডনির ক্ষতি, মেনিনজাইটিস, লিভার ফেইলর, শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ এমনকী মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দিতে পারে,” বলেছেন এক চিকিৎসক।

প্রাণীর প্রস্রাবে দূষিত মাটি ও পানি এড়িয়ে চললেই লেপটোস্পাইরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি কমে যাবে; অন্যথায় সুরক্ষার জন্য পোশাক ও জুতা পরতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজা রাজ্যের বাসিন্দাদের ‘আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই’ বলে আশ্বস্ত করেছেন। সাবধানতা অবলম্বনে আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে না যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

‘ইঁদুর জ্বরের’ বিস্তৃতি ঠেকাতে বন্যাক্রান্ত এলাকাগুলোর চারপাশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতিষেধক হিসেবে এন্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিন দেওয়া হচ্ছে।

কেরালার কোঝিকোড়ে এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মানুষের খোঁজ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। সেখানকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ জন্য বিশেষ একটি ওয়ার্ডও খোলা হয়েছে।

গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ৮ অগাস্টের পর থেকে কেরালায় দুই শতাধিক লোক নিহত হয়, ক্ষয়ক্ষতি হয় ২০ হাজার কোটি রুপিরও বেশি।