দেশে বছরে তৈরি হবে এক লাখ বাইক

দেশে মোটরসাইকেল উৎপাদনে একটি নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা যাতে ২০২৭ সালের মধ্যে ১০ লাখ মোটর সাইকেল উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। অর্থাৎ বছরে এক লাখের বেশি মোটর সাইকেল তৈরি হবে।

এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ বাইক আমদানিকারক দেশের পাশাপাশি উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে। কারণ, এই বাইকের একটি অংশ বিদেশেও পাঠানো হবে। এতে দেশে এই খাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানেরও আশা করছে সরকার।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালেয় মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম এসব কথা বলেন।

সচিব বলেন, ‘আমাদের দেশে দেশজ ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে দেশে নতুন মোটরসাইকেল নির্মাণের জন্য এ নীতিমালা অনুমোদন পেল। নীতিমালায় মোটর সাইকেল উৎপাদনের জন্য একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ লাখ এবং ২০২৭ সালের মধ্যে ১০ লাখ মোটর সাইকেল উৎপাদন করা হবে। এ মোটর সাইকেল উৎপাদন করা হবে দেশীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে।’

‘এ নীতিমালার মাধ্যমে বাংলাদেশে যন্ত্রাংশ এনে মোটরসাইকেল তৈরির পরিবর্তে বিশ্বমানের কারখানা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করা হবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটিয়ে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের সৃষ্টির করা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

বাংলাদেশে মোটর সাইকেলের বাজার প্রতি বছরই বাড়ছে। ২০১৬ সালেই দেশে বিক্রি হয়েছে দুই লাখ মোটর সাইকেল। আর পরের বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় চার লাখ। চলতি বছরের হিসাব এখনও পাওয়া না গেলেও এই সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই বেশি।

তবে উন্নয়নশীল বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বাইক ব্যবহারের হার কম। দেশে প্রতি ১১৬ জনের একজনের মোটরসাইকেল রয়েছে। ভারতে এই হার ২০ এবং ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ায় প্রতি চার জনের একজন মোটর সাইকেলে চড়েন।

অর্থাৎ এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলেও বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ মোটরসাইকেল আমদানি করতে হবে।

বাংলাদেশে মোটর সাইকেল সংযোজন শিল্প গড়ে উঠলেও উৎপাদনে যেতে সরকার গত কয়েক বছর ধরেই বাজেটে নানা নীতি সহায়তা দিচ্ছে। আর বহুজাতিক কোম্পানির হোন্ডার পাশাপাশি বাংলাদেশি রানারসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানও উৎপাদন শুরু করেছে। এর পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত ও ভারতীয় কিছু প্রতিষ্ঠান এ দেশে উৎপাদন শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মোটর সাইকেল শিল্প থেকে জিডিপির বর্তমান অবদান ০.৫ শতাংশ। এটা উন্নীত করে ২০২৫ সালের মধ্যে ২.৫ শতাংশ করার লক্ষ্য নির্ধারণ গ্রহণ করা হয়েছে।

মোটরসাইকেলের বাজার বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রত্যক্ষ বাপরোক্ষ কর্মসংস্থান পাঁচ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১৫ লাখ হবে বলেও আশা করছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।