কেন আফগানদের বিপক্ষে এই দুর্দশা

এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়। ২৫৬ রানের জবাবে মাত্র ১১৯ রান করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পর্বতসম দৃঢ়তার ব্যাটিং লাইনআপ চোখে পড়েনি আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ভক্তদের ধারণা, এমন হারের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। তবে নিজেদের ভুল শুধরে আজ শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে চাইবেন মাশরাফিরা।

এক ম্যাচ হাতে রেখেই বাংলাদেশের সুপার ফোর নিশ্চিত হয়ে যায়। তাই প্রথম থেকেই অধিনায়ক মাশরাফি এবং কোচ স্টিভ রোডসের ভাবনা ছিল সুপার ফোর রাউন্ডে ভারতের বিপক্ষে এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে। আফগানিস্তান যখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯১ রানে জয় পেয়ে নিজেদের প্রমাণ করেছে, তখন বাংলাদেশ পরবর্তী ম্যাচকে মাথায় রেখে দল সাজিয়েছে। ফলে নিয়মরক্ষার ম্যাচে অভিজ্ঞতা এবং নিয়ন্ত্রণ কাজে লাগাতে পারেনি টাইগাররা।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিশ্রামে ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মুস্তাফিজুর রহমান। চোটের কারণে আগেই দল থেকে ছিটকে পড়েন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। ইনজুরি নিয়ে খেলেছেন অভিষিক্ত তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত এবং সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। মুস্তাফিজের অভাব পূরণ করতে না পারলেও আলো ছড়াতে চেষ্টা করেছেন অভিষিক্ত বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি। পেয়েছেন দুটি উইকেট, সাকিবের বলে ক্যাচ নিয়েছেন একটি। তবুও মুশফিকদের অনুপস্থিতিতে দলের শরীরী ভাষায় যেন ইনজুরির কারণে ভোগান্তির হাহাকার ফুটে উঠেছে আফগানদের বিপক্ষে।

তবে বাংলাদেশ হেরেছে বলার চেয়ে আফগানিস্তান হারিয়েছে, বলাটাই শ্রেয়। কারণ, শুরুতে আফগানরা টসে জিতে ব্যাটিং নিলেও উইকেটে থিতু হতে পারছিলেন না কেউই। ছোট ছোট কিছু জুটি গড়ে খেলা এগিয়ে নিচ্ছিল আফগানিস্তান। সাকিব মোট চারটি উইকেট পেয়ে গেছেন ততক্ষণে। তবে নিজের জন্মদিনকে স্মরণীয় করতেই মনে হয় অলরাউন্ডিং নৈপুণ্যের পরিচয় দেন আফগান তরুণ রশিদ খান। ৩২ বলে ৫৫ রান এবং গুলবাদিন নাইবের সঙ্গে ৯৫ রানের জুটি আফগানিস্তানকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লড়াইয়ের রান এনে দেয়। তাই ব্যাটিং ইনিংসের শেষ অংশ থেকে সম্পূর্ণ বোলিং ইনিংসেই ছন্দে ছিল আফগানরা।

আফগানিস্তানের বোলিং, ব্যাটিং ও ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই নৈপুণ্য দেখিয়েছে খেলোয়াড়রা। স্পিনারদের পাশাপাশি উইকেট পেয়েছেন পেসাররাও। রশিদ খান নিজেও দুটি উইকেট নেন এবং একটি রানআউট করেন। এমনকি তিনজন ব্যাটসম্যান স্পিনারদের বলে আউট হন শুধু লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েই! স্পিনারদের যেন বুঝতেই পারছিলেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে বাংলাদেশ দলকে। আজ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে জ্বলে উঠতে হবে তরুণদের। গতকালকের খেলা নিয়মরক্ষার হলেও আজকের ম্যাচের ওপর নির্ভর করবে, আরেকটি এশিয়া কাপের ফাইনালে রোডসের শিষ্যরা যেতে পারবেন কি না। তবে সেটিও সময় হলেই দেখতে পারবেন ভক্তরা।