পাকিস্তানের জালে বাংলাদেশের মেয়েদের ১৭ গোল

প্রথমার্ধে ৮-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরো ৯ গোল করে বাংলাদেশ। তাতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলে পাকিস্তানকে ১৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ছেড়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। রোববার মেয়েদের বয়সভিত্তিক ফুটবলের এই আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। এই জয়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে সেমি ফাইনালও নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের বিশাল এই জয়ে একাই ৭ গোল করেছেন স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না। ৪ গোল করেছেন মার্জিয়া। জোড়া গোল করেছেন শিউলি আজিম। ১টি করে গোল করেছেন মিসরাত জাহান মৌসুমী, আঁখি খাতুন, কৃষ্ণা রানী সরকার ও তহুরা খাতুন।

একমাস আগে এই ভুটানেই অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে পাকিস্তানকে ১৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। বষয় ভিত্তিক আসরের আরেকটু বড় পর্যায়ে এবার সেই পাকিস্তানকে ১৭ গোল দিল বাংলাদেশ। এরআগে ২০১৪ এএফসি অনূর্ধ্ব-১৫ আঞ্চলিক ফুটবলে ভুটানকে ১৬ গোল দিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। সেই হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই জয়টিই যে কোনো পর্যায়ে বাংলাদেশের মেয়েদের সবচেয়ে বড় জয়।

ভুটানের থিম্পুর চাংমিলিথাং স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় দুই দলের লড়াই। ম্যাচের ৬ মিনিটে শুরু বাংলাদেশের গোল উৎসব। মার্জিয়া গোল করে প্রথম এগিয়ে দেন বাংলাদেশকে। সম্মিলিত আক্রমণ থেকে কৃষ্ণার নেওয়া কিক গোলরক্ষক প্রথমে ফিরিয়ে দিলেও বল জালে জড়াতে ভুল করেননি মার্জিয়া।

চার মিনিটের ব্যবধানে সিরাত জাহান স্বপ্নর গোলে ব্যবধান দ্বিগুন করে বাংলাদেশ। ১৩ মিনিটে ডি-র উপর থেকে দূরপাল্লার শটে বল জালে জড়ান মার্জিয়া। ব্যবধান ৩-০ তাতে। ম্যাচের ২২ মিনিটে অধিনায়ক মৌসুমির বাড়ানো বলে বাঁ-প্রান্ত দিয়ে মার্জিয়া একক প্রচেষ্টায় ডিবক্সে ঢুকে শট নেন। প্রথম দফায় গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলেও পরের প্রচেষ্টায় বল জালে জড়ান তিনি। মার্জিয়ার হ্যাটট্রিক পূরণের সঙ্গে ৪-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

৩০ মিনিটে সানজিদার এসিস্ট থেকে দ্বিতীয় গোল করেন সিরাত জানা স্বপ্না। বাংলাদেশ ৫-০ গোলে লিড নেয় তাতে। ৩২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে শিউলি আজিম ব্যবধান ৬-০ করেন। ৩৭ মিনিটে গোল উৎসবে গোল দেন অধিনায়ক মিসরাত জাহান মৌসুমি। ফলে ৭-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

৪৪ মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন স্বপ্না। সানজিদার বাড়ানো বলে মাথা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান তিনি। তাতে ৮-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ মিনিটে গোল উৎসব শুরু করে বাংলাদেশ। কর্নার কিক থেকে পাওয়া বল ধরে কৃষ্ণা গোলমুখে বাড়ালে সেটিতে মাথা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান আঁখি খাতুন। ৯-০ গোলে লিড পায় বাংলাদেশ। ৬২ মিনিটে স্বপ্না নিজের চতুর্থ গোল করলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১০-০ গোলে।

৬৯ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতরে কৃষ্ণাকে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে শিউলি আজিম গোল করতে ভুল করেন নি। তাতে ১১-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

৭১ মিনিটে মার্জিয়া নিজের চতুর্থ গোল আদায় করে নেন। তাতে ১২-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৭৩ মিনিটে স্বপ্না নিজের পঞ্চম গোল করলে ১৩-০ গোলের লিড নেয় বাংলাদেশ। মাসুরা পারভিনের বাড়ানো বলে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শটে বল জালে জড়ান স্বপ্না।

৭৪ মিনিটে কৃষ্ণার গোলে বাংলাদেশ ব্যবধান ১৪-০ করে। দুর্দান্ত প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান কৃষ্ণা। ৭৬ মিনিটে স্বপ্না নিজের ষষ্ঠ গোল করলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১৫-০ গোলে। কৃষ্ণার নেওয়া কিক প্রথমে বারে লেগে ফিরলে ফিরতি শটে গোল করেন স্বপ্ন।

৮৭ মিনিটে বদলি নামা তহুরা খাতুন ব্যবধান ১৬-০ করেন। ৯০ মিনিটে স্বপ্না নিজের সপ্তম গোল করলে বাংলাদেশের ১৭-০ গোলের জয় নিশ্চিত হয়।

গ্রুপে বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে নেপালের বিপক্ষে। একই ভেন্যুতে যে ম্যাচ আগামী মঙ্গলবার।