মায়া ফের খালাস

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে বিশেষ জজ আদালতের দেয়া ১৩ বছরের সাজার রায় বাতিল করে তাকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। মায়ার করা আপিলের ওপর পুনঃশুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ মায়ার আপিল মঞ্জুর এবং দুদকের করা আপিল খারিজ করে দিয়ে এ রায় দেন।

এর আগে ২০১০ সালের অক্টোবরে হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ মায়ার আপিল গ্রহণ করে তাঁকে খালাসের রায় দিয়েছিল। পরে দুদকের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের ওই রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির আদেশ দেন।

আদালতে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী বশির আহমেদ, সাঈদ আহমেদ রাজা, তাজুল ইসলাম ও জিল্লুর রহমান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহরীন ও এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

রায়ের পর মায়ার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, দুদক অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের কোনো প্রমাণ দুদক দেখাতে পারেনি। তিনি বলেন, হাইকোর্টের এ রায়ের ফলে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার নির্বাচন করতে কোনো বাধা নেই। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ আমাদের মেনে নিতে হবে। রায়ের বিষয়টি দুদককে অবহিত করেছি। এখন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি-না সেই সিদ্ধান্ত দুদকই নেবে।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৩ই জুন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত তাকে দুটি অভিযোগে ১০ ও ৩ বছর করে মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি। আপিলের শুনানি নিয়ে ২০১০ সালের ২৭শে অক্টোবর এক রায়ে তাকে খালাস দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। পরে দুদক হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ২০১৫ সালের ১৪ই জুন এক আদেশে খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে আপিলের পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন। এরপর আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী হাইকোর্টে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার আপিলের ওপর পুনঃশুনানি শুরু হয়। ১৪ই আগস্ট শুনানি শেষ হলে ৭ই অক্টোবর রায়ের দিন ধার্য করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। এরপর রোববার মায়ার পক্ষে আইনজীবীরা অধিকতর শুনানি করেন। গতকাল দুদকের আইনজীবীর শুনানি নিয়ে রায় ঘোষণা করেন আদালত।