খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা কাল, ফিজিওথেরাপি আজ থেকে

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। বুধবার পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বোর্ড তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে। মঙ্গলবার বিকাল অথবা সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার ফিজিওথেরাপি শুরু হতে পারে।

মঙ্গলবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়েছেন বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন।

পরিচালক জানান, বিএসএমএমইউতেই খালেদা জিয়াকে সব ধরনের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। আর উনার যে রোগ (আর্থ্রাইটিস), সেই রোগের চিকিৎসার জন্য এখানে আলাদা একটা ডিপার্টমেন্টই আছে।

তিনি জানান, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বোর্ড এখনো তাকে দেখার সুযোগ পায়নি। তবে বোর্ডের একাধিক সদস্য পৃথকভাবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। বুধবার বিকাল ৪টায় পূর্ণাঙ্গ বোর্ড তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পারে।

বিএসএমএমইউ পরিচালক বলেন, ইতিমধ্যে তার (খালেদা জিয়া) শারীরিক পরিস্থিতির ইতিহাস সংগ্রহ করেছি আমরা। মঙ্গলবার বিকাল বা সন্ধ্যায় তার ফিজিওথেরাপি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে সোমবার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের ৪ সদস্য সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া গেঁটে বাতজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তার ডায়াবেটিসসহ বেশকিছু রোগ অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আছে। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে এনে তার মূল চিকিৎসা শুরু হবে। তাই বিএসএমএমইউয়ে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা কতদিন চলবে, তা নির্দিষ্ট করে এখনই বলতে পারছে না মেডিকেল বোর্ড।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। এর পর থেকে খালেদা জিয়া নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পাঁচ মাসের মাথায় ১২ জুলাই আপিলের শুনানি শুরু হয়।

এদিকে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষ বোর্ড গঠন করার নির্দেশনাসহ তার চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর একটি রিট করা হয়। ওই আবেদনের ওপরই বৃহস্পতিবার আদালত চিকিৎসার আদেশ দেন। এর মধ্যে আবার গত ১৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে।

পর দিন ১৬ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন কারাপ্রধানের কাছে জমা দেয়া হয়। যেখানে স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়ার জন্য মত দেয় মেডিকেল বোর্ড। তবে যে হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে, সে হাসপাতালের কথা সুপারিশ করা হয়। সে বিবেচনায় বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কথাই উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

গত বৃহস্পতিবার হাইকোটের দেয়া নির্দেশনানুযায়ী, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এর আগে চলতি বছরের ৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য কারাগার থেকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়েছিল। সেই সময় কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে ফের জেলখানায় পাঠানো হয়।

ওই ঘটনার ছয় মাস পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে শনিবার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়।

বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক বলেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি কেবিন ব্লকের ছয়তলায় অবস্থান করছেন। আমরা হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা পেয়েছি। সেই অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তার সঙ্গে আমাদের দেখা হয়েছে ও কুশলবিনিময় হয়েছে।