মোবাইল টিমের নামে অবৈধ ভাবে সিভিল টিম পরিচালনা করছে যশোর কোতয়ালি পুলিশ

যশোর কোতয়ালি পুলিশ মোবাইল টিমের নামে অবৈধ ভাবে সিভিল টিম পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোতয়ালি থানায় ৩টি পৃথক মোবাইল টিম রয়েছে। প্রত্যেক টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন একজন করে এস আই। আর এস আইয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন ৫ জন করে পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে দুজন এ এস আই ও তিনজন কনসটেবল। মোবাইল-১৫ টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন এস আই সুজিত। তার সহযোগি হিসেবে রয়েছেন, এ এস আই মমিনুল সিদ্দিক, এ এস আই লিটন ও তিনজন কনসটেবল। মোবাইল-১৬ টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন এস আই হাসান। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন এ এস আই ফয়সাল হোসেন, এ এস আই আফজাল হোসেন ও ৩ জন কনসটেবল। মোবাইল-১৮ টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন এস আই মাহমুদ। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন এ এস আই মোল্লা সফিকুজ্জামান, এ এস আই আমিনুল ইসলাম ও তিনজন কনসটেবল। এই মোবাইল টিম গুলি পুলিশের অবৈধ সিভিল টিম হিসেবে কাজ করছে। সিভিল টিম র্অথাৎ পুলিশ সশস্ত্র অবস্থায় সাদা পোশাকে অভিযান চালাচ্ছে।

সম্প্রতি দেশের উচ্চ আদালত থেকে সাদা পোশাকে পুলিশের সিভিল টিম পরিচালনা করা অবৈধ ঘোষনা করলে পুলিশ তা মানছে ন। সিভিল টিম পরিচালনা করতে হলে অবশ্যই পুলিশ লেখা কটি অথবা স্ট্রিকার ব্যবহার করতে হবে। অভিযানের সময় যাতে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে এরা প্রশাসনের লোক। কারণ সিভিল পোষাকে পুলিশ অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে অভিযান চালালে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বোঝা যায় না অভিযানকারিরা পুলিশ, সন্ত্রাসী না বিশেষ কোন বাহিনী। ইতিপূর্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র সিভিল পোষাকধারিরা অপরাধ কর্মকান্ড সংঘঠিত করেছে। অনেক পুলিশ সদস্যরাও সাদা পোষাকে ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ে। যে কারণে উচ্চ আদালত থেকে সাদা পোষাকে পুলিশি অভিযান অবৈধ ঘোষনা করে।

অথচ যশোর কোতয়ালি থানা পুলিশ আদালতের নিষেধাজ্ঞার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে অবৈধ ভাবে পুলিশের সিভিল টিম পরিচালনা করছে। পুলিশের এই সিভিল টিমের সদস্যরা প্রতিদিন শহর, শহরতলী, পাড়া, মহল্লা, ও গ্রামে গঞ্জে যেয়ে নিরীহ খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক, জেলে, ব্যবসায়ি, ছাত্রদের কল্পিত বিভিন্ন অভিযোগে ধরে এনে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা উৎকােচ আদায় করে ছেড়ে দিচ্ছে। যারা টাকা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদেরকে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, অস্ত্র ও নাশকতা মামলায় চালান দেয়া হচ্ছে।

আশ্চার্যের বিষয় পাড়া, মহল্লা গ্রামগঞ্জ থেকে ধরে আনা নিরীহ মানুষদের নাম সিভিল টিমের সদস্যরা থানার আসামি রেজিষ্টারে এন্টি করে না। সিভিল টিমের নেতৃত্বদানকারি দারোগা তার গোপন রেজিষ্টারে লিখে রাখে। আসামিদের স্বজনরা থানায় এসে আসামির খোঁজ করলে ডিউটি অফিসারও বলতে পারেনা কোন লোক ধরে আনা হয়েছে কিনা!
ফলে গ্রামগঞ্জ থেকে ধরে আনা আসামির স্বজনরাও আতংকিত হয়ে পড়ে। আর সিভিল টিমের দারোগারা এই সুযোগ কাজে লাগায়। আসামিদেরকে থানার পিছনে গোপন ঘরে নিয়ে যেয়ে তাদের উপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। এরপর আসামির স্বজনদের কাছে দাবি করা হয় মোটা অংকের টাকা উৎকোচ। আসামির স্বজনরা পুলিশি নির্যাতনের ভয়ে আসামিদের বাঁচাতে দাবিকৃত উৎকোচ দিয়ে আসামিদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এভাবে কোতয়ালি পুলিশের মোবাইল টিমের নামে পরিচালিত সিভিল টিম প্রতিদিন অবৈধ ভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর নি:শ্ব হচ্ছে সাধারণ নিরীহ মানুষ। পুলিশের দাবিকৃত উৎকোচের টাকা জোগাড় করতে অনেকে আবার প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র বন্ধক রাখে।

সিভিল টিম পরিচালনা বৈধ কিনা জানতে চাওয়া হলে কোতয়ালি থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন সিভিল টিম নামে কোন টিম নাই। তাছাড়া সিভিল টিমের কোন বৈধতা নেই অধৈতাও নেই।