জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৮৭

চট্টগ্রামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে কঠিন লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শন উইলিয়ামসের সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে জিম্বাবুয়ে ৫ উইকেটে করেছে ২৮৬ রান।

অসাধারণ এক ইনিংস খেললেন শন উইলিয়ামস। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে খেলেছেন ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। সময় উপযোগী ব্যাটিংয়ে তিনি অপরাজিত ছিলেন ১২৯ রানে। ১৪৩ বলের ইনিংসটি উইলিয়ামস সাজিয়েছেন ১০ চার ও ১ ছক্কায়। তার সঙ্গে শেষ দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন পিটার মুর, ২১ বলে ২ ছক্কায় তিনি করে যান ২৮ রান।

এর আগে ব্রেন্ডন টেলর জ্বলে উঠেছিলেন ব্যাট হাতে। চলতি সিরিজে প্রথমবার স্বরূপে ফিরে খেলেছেন ৭৫ রানের কার্যকরী ইনিংস। সঙ্গে সিকান্দার রাজার ৪০ রানে ভর দিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে জিম্বাবুয়ে করেছে ২৮৬ রান।

বল হাতে খুব একটা ভালো দিন কাটেনি বাংলাদেশের। সর্বোচ্চ ২ উইকেট শিকার নাজমুল ইসলামের। তবে আবু হায়দার ও মাহমুদউল্লাহ ছিলেন মিতব্যয়ী। আবু হায়দার ৯ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট। আর ১০ ওভারে মাহমুদউল্লাহর খরচ ৪০ রান।

সিকান্দারের আউটের পর উইলিয়ামসের সেঞ্চুরি

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেলেন শন উইলিয়ামস। তার সেঞ্চুরির আগে অবশ্য জিম্বাবুয়ে হারায় তাদের চতুর্থ উইকেট। নাজমুল ইসলামের বলে ফিরে গেছেন সিকান্দার রাজা। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৪৫ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৭ রান।

২০১৫ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম শতক পূরণ করেছিলেন উইলিয়ামস। আরেকটি সেঞ্চুরি পেতে তিন বছর অপেক্ষা করতে হলো তাকে। তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরির পূরণের আগে নাজমুলের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান সিকান্দার রাজা। এই স্পিনারের বল লং অনের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন সিকান্দার, যদিও ঠিকমতো খেলতে না পারায় সৌম্য সরকারের সহজ ক্যাচ হয়ে তিনি ফিরে যান ৪০ রান করে।

১৩২ রানের জুটি ভাঙলেন নাজমুল

স্বস্তি ফিরেছে বাংলাদেশের। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ব্রেন্ডন টেলরকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়ের শতাধিক রানের জুটি ভাঙেন নাজমুল ইসলাম। ৩৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮৪ রান সফরকারীদের।

মাত্র ৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া জিম্বাবুয়ের হাল ধরেছিলেন ব্রেন্ডন টেলর। তাকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন শন উইলিয়ামস। দলীয় ১৩৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে, এই জুটি ভাঙেন নাজমুল ইসলাম অপু।

নাজমুলের চতুর্থ ওভারে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ হন টেলর। ১৩২ রানের জুটি ভাঙেন বাংলাদেশি স্পিনার। টেলরের ৭২ বলে ৭৫ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ৮ চার ও ৩ ছয়ে।

টেলর-উইলিয়ামসের হাফসেঞ্চুরি

মাত্র ৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে টালমাটাল হয়ে পড়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু টানা দ্বিতীয় ম্যাচে আবারও তাদের হয়ে প্রতিরোধ গড়লেন ব্রেন্ডন টেলর, তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন শন উইলিয়ামস। বেশ সতর্ক ব্যাটিং করেছেন তারা। ৪৯ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে টানা দ্বিতীয় ও ৩৬তম হাফসেঞ্চুরি করেছেন টেলর। তার পথ ধরে ৭৩ বলে ফিফটি করেন উইলিয়ামসও। গত ম্যাচে মাত্র ৩ রানের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। এবার তিনি পেলেন ৩০তম হাফসেঞ্চুরি।

টেলরকে জীবন দিলেন রনি

সপ্তম ওভারের শেষ বলে ব্রেন্ডন টেলরকে জীবন দেন আবু হায়দার রনি। জিম্বাবুয়ে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের ব্যাটে পায়ে লেগে বল চলে আসে ক্রিজের মাঝামাঝি জায়গায়। কিন্তু সামনে এগিয়ে ডাইভ দিয়েও ফিরতি ক্যাচটি হাতে নিয়ে ধরে রাখতে পারেননি এই বাঁহাতি পেসার। ৬ রানে জীবন পান টেলর।

২৩ বলে প্রথম রান

প্রথম ওভারে ৬ রান নেওয়া জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ওভার থেকেই চাপে পড়েছে। আবু হায়দার রনি ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের আঁটসাঁট বোলিংয়ে রানই করতে পারেনি ৪.৪ ওভার পর্যন্ত। রনির ওই ওভারের পঞ্চম বলে দৌড়ে একটি রান নেন শন উইলিয়ামস। তাতে ২৩ বলে প্রথম রান পায় সফরকারীরা।

রনি ফেরালেন মাসাকাদজাকে

এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হওয়া আবু হায়দার রনি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ শুরু করলেন। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই এই বাঁহাতি পেসার ফেরালেন হ্যামিলটন মাসাকাদজাকে। মাত্র ২ রানে বোল্ড হয়েছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। পরপর দুই ওভারে দুটি উইকেট হারায় সফরকারীরা।

শুরুতেই সাইফউদ্দিনের আঘাত

আবু হায়দার রনি প্রথম ওভার বল করেন। লেগ বাই থেকে ৪ রানসহ ৬ রান নেয় জিম্বাবুয়ে। শুরুটা তাদের ভালো হলেও দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খেল তারা। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিজের তৃতীয় বলেই কেপাস ঝুয়াওকে বোল্ড করলেন তিনি। রানের খাতা না খুলেই বিদায় নেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার। ৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্যে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকায় ২৮ রানে জেতার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছিল তারা। শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিতলেই আরেকটি হোয়াইটওয়াশ করার কীর্তি গড়বে স্বাগতিকরা।

এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাই শেষ ম্যাচে নির্ভার তারা। এই সুযোগে দলের তারকা পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। দলে রয়েছে আরও দুটি পরিবর্তন। আরিফুল হকের ওয়ানডে অভিষেক হচ্ছে। প্রথম দুই ম্যাচে রানের খাতা খুলতে না পারা ফজলে রাব্বি এবার আর জায়গা পাননি। বাদ পড়া অন্যজন হলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আরিফুলের সঙ্গে দলে ঢুকেছেন সৌম্য সরকার ও আবু হায়দার রনি।

২০০৫ সালে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। সেবার ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশ জিতেছিল ৩-২ ব্যবধানে। এরপর থেকে জয়ের পাল্লাটা ভারি হয়েই চলেছে বাংলাদেশের। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ১০ বার সিরিজ জিতেছে তাদের বিপক্ষে। দেশের মাটিতেই ৮ বার, বাকি দুবার জিম্বাবুয়ের মাটিতে। সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৬ সালে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতে মাশরাফিরা।

এর আগে ১১ বার প্রতিপক্ষকে হোয়াইওয়াশ করার সামর্থ্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে জিম্বাবুয়েই সবচেয়ে বেশি ধবলধোলাই হয়েছে। মাশরাফি অবশ্য হোয়াইটওয়াশ নিয়ে কিছু বললেন না। তবে জয়টা যে ভাবনায় আছে সেই কথাই মনিয়ে করিয়ে দিলেন সবাইকে, ‘ম্যাচ জিতলে এমনিতেই হোয়াইটওয়াশ হয়ে যাবে তারা। আমরা জয়ের অভ্যাসটা ধরে রাখতে চাই। নিজেদের সেরাটা দিয়ে ম্যাচটা জিততে চাই।’