ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন পেছানোর দাবি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে: ইসি সচিব

জানুয়ারিতে নির্বাচন হলে তা কমিশনের জন্য কষ্টদায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন পেছানোর যে দাবি জানিয়েছে, কমিশন তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।’ বুধবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে পৃথক বৈঠকের পর ইসি সচিব একথা বলেন।

নির্বাচন তিন সপ্তাহ পেছাতে ঐক্যফ্রন্টের দাবির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বলেছে, ঘোষিত তফসিল পর্যাপ্ত নয়। এ নির্বাচনের তারিখ যেন পেছানো হয়। কমিশন বলেছে, জানুয়ারিতে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। অনেকগুলো পুনঃনির্বাচন করা লাগতে পারে। গেজেট প্রকাশের বিষয় রয়েছে। বিশ্ব ইসতেমা রয়েছে। সব মিলিয়ে জানুয়ারিতে নির্বাচন করলে আমাদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে যাবে।’

নয়াপল্টনের ঘটনায় কমিশন দুঃখ প্রকাশ করেছে, আওয়ামী লীগ ওই ঘটনার বিচার চেয়েছে, এ বিষয়ে কমিশনের বক্তব্য জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এজন্য কমিশন খুবই দুঃখ পেয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সেই আশা প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে ঘটনাটি খতিয়ে দেখার কথা বলেছে।’

পল্টনের ঘটনার জের ধরে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের ভালো পরিবেশ দেখছে না এমন অভিযোগের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এটা একটি দুর্ঘটনা বলা যায়। আমরা দেখেছি, সব জোটে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণ হচ্ছিল।এজন্য খুবই আনন্দিত বলেও আমরা আগে জানিয়েছি। এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যেন না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখা হবে।’

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র জমা ও গ্রহণ শেষে বিএনপি যখন শুরু করলো, তখন আপনারা পুলিশকে ছিঠি দিলেন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য, এটা কেন জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে চিঠি দিয়েছি, তা সবার জন্যই প্রযোজ্য। ভবিষ্যতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যখন মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাবেন, তখন যেন শোডাউন না হয়, সে জন্য সতর্কতামূলকভাবে পুলিশের আজিপিকে বলে দিয়েছি। পাশাপাশি রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশনা দিয়েছি যেন আচরণ বিধি ভঙ্গ না হয়।’

এক প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দলীয় কার্যালয়ের শোডাউন আচরণ বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে, এমনটি বিধিতে লেখা নেই। মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণ উৎসবের অংশ। আমাদের দেশের লোকেরা ভোটকে উৎসব হিসেবেই নেয়। কিন্তু জনদুর্ভোগ হচ্ছে বলে আমরা মিডিয়ায় সংবাদ পাচ্ছি। এ কারণে রাস্তঘাট বন্ধ হয়ে যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছি।’ নির্বাচন কমিশন সব দলকে আস্থায় রেখেই নির্বাচন করতে চায় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আচরণ প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর আইন প্রশাসন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত হয়। সুতরাং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দেবে, তারা তা পালন করবে।’ খালেদা জিয়ার নির্বাচনের সুযোগ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি আইনগত বিষয়। এ বিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই। আইনগত বিষয় আইগতভাবেই নিষ্পত্তি হবে।’

দণ্ডিতদের প্রার্থিতা প্রশ্নে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কী নির্দেশনা দিয়েছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংবিধান ও আরপিওতে যেভাবে বলা আছে সেভাবেই পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।’

সরকারি বাসভবন গণভবনে বলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাছাইয়ের বিষয়ে কোনও অভিযোগ পেলে তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে বলেও ইসি সচিব জানান।