আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন সুলতান মনসুর

sultan mansur

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম তাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে নিয়ে পড়েছে সংকটে। বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং গণফোরাম আলাদাভাবে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের নির্বাচিত কোন সংসদ সদস্য শপথ নিবেন না। এই সিদ্ধান্ত সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান মেনে নিলেও যে কোন অবস্থায় শপথ নিতে বদ্ধপরিকর মৌলভীবাজার-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, গনফোরাম থেকে নির্বাচিত দুইজন এমপি হিসাবে শপথ নেবেন না। তার দল এবং ফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ সংসদে গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গণফোরাম নেতারা জানিয়েছেন, দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিলে তাকে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কার করা হবে।

এসব হুমকি-ধমকি অপেক্ষা করেই আওয়ামী লীগে ফেরার জন্য ধাপে ধাপে এগোচ্ছেন সুলতান মো. মনসুর। সম্পর্ক বৃদ্ধি করছেন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে। সম্প্রতি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে অসুস্থ চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আহমদ হোসেনকে দেখতে যান তিনি। মূলত চূড়ান্ত সিগন্যাল পেলেই বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা শপথ নিয়ে সংসদে যাবেন।

যদিও সুলতার মনসুর আগে থেকেই বলে আসছেন, জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করবেন না। জনগণের কথা বলতেই তিনি শপথ নিয়ে সংসদে যাবেন। তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছে আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে সংসদে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শপথ নেব।

সুলতার মনসুর বলেন, জনগণ চান দায়িত্ব পালনে সংসদে যাই। জনগণের পক্ষে কথা বলবো। তারা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আমি আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ঐক্যফ্রন্টে এবং ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা হিসেবে স্টিয়ারিং কমিটিতে ছিলাম। যেহেতু নির্বাচনে নিবন্ধিত একটি দলের প্রার্থী হতে হবে, সে কারণে বঙ্গবন্ধুর একজন অনুসারী হিসেবে আমি মনে করেছি গণফোরাম আমার চিন্তার কাছাকাছি। সেজন্য গণফোরামের তালিকায় আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। আমি তো গণফোরামের কোনো প্রেসিডিয়াম মেম্বার না বা কোনো পদে নেই।

এদিকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপিও। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার মধ্যে সংস্কারপন্থী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর দলীয় পদ হারান তিনি। এরপর দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন। গত জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে কামাল হোসেনের গণফোরামে যোগ দেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তাও তিনি। ঐক্যফ্রন্টের প্রচারণায় এসে তোপের মুখেও পড়েছিলেন সুলতান মনসুর। তার শরীর থেকে মুজিব কোট খুলে নেয়ারও চেষ্টা করা হয়েছিল সিলেটে।