ঘুর্ণিঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে যশোরের অভয়নগর উপজেলায় বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের অন্তত ২০টি বাড়ি ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গাছ ভেঙ্গে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে তার ছিঁড়ে গেছে।
বুধবার বিকেল পর্যন্ত উপজেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। শিলাবৃষ্টিতে সবজি, সরিষা, মসুর এবং পানের ব্যাপক হয়েছে। গত সোমবার দিবাগত রাতে অভয়নগরে উপজেলার ওপর দিয়ে শিলা বৃষ্টিসহ ঘুর্ণিঝড় বয়ে যায়। পরদিন মঙ্গলবার ও বুধবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ে উপজেলার কামকুল, বর্ণী, বগুড়াতলাসহ বিভিন্ন গ্রামের অন্তত ২০টি বাড়ি ভেঙ্গে পড়ে। বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ ভেঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়ে পড়ায় উপজেলার বেশিরভাগ স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
উপজেলার কামকুল গ্রামের সেলিম সরদার জানান, সোমবার রাতের ঘুর্ণিঝড়ে তাঁর বাড়ি ভেঙ্গে গেছে।
বগুড়াতলা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছিলেন। সরিষা পেকে গেছে। কিন্তু ঘুর্ণিঝড়ের সাথে শিলাবৃষ্টিতে তাঁর খেতের সব সরিষা ঝড়ে পড়েছে।
অভয়নগর গ্রামের পানচাষি সবুর উদ্দিন মোল্যা জানান, শিলাবৃষ্টিতে তাঁর এক বিঘা জমির পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ১০ হেক্টর জমির সরিষা ঘুর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ছাড়া, ৬২৫ হেক্টর জমির সবজির মধ্যে ১০০ হেক্টর এবং ৫৫ হেক্টর জমির মসুরের মধ্যে ৪০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে পানের ক্ষতি হলেও ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি।
অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ছামদানী বলেন, ঘুর্ণিঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ফসলের বেশ ক্ষতি হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মসুরের। পানেরও ক্ষতি হয়েছে। পানের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলছে। তিনি বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করছি। তাঁদের প্রদোণনা দেওয়া হবে।
যশোর-২ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নওয়াপাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক(ডিজিএম) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, হঠ্যাৎ করে ঝড় ও শিলা বৃষ্ঠির কারণে অনেক স্থানে গাছ উপড়ে এবং গাছের ডাল পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গিয়েছিল। বুধবার পর্যন্ত অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।