এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে বন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, প্যারোল দেয়া যায় না, চাইতে হয়। সরকারের কাছে প্যারোলে মুক্তি চাইলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়াকে সরকার প্যারোলে মুক্তি দেবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কাউকে প্যারোলে মুক্তি জোর করে দেয়া যায় না, প্যারোলের জন্য আবেদন করতে হয়, প্যারোল চাইতে হয়। সরকার জোর করে কাউকে প্যারোল দিতে পারে না।’
গত ১ এপ্রিল বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য গঠিত হয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
এর মধ্যেই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে প্যারোলে মুক্তির প্রসঙ্গটি সামনে আসে। গত শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো আবেদন তারা এখনো পাননি। পেলে বিবেচনা করবেন।
তবে রবিবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গণঅনশনে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তারা খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চান, কোনো প্যারোল চান না। জামিনে মুক্তি পাওয়া খালেদা জিয়ার আইনি অধিকার বলেও জানান ফখরুল।
এদিকে সোমবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী বলেন, ‘মন্ত্রীদের কথা শুনে মনে হচ্ছে সরকার খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। আমরা দেশনেত্রীর প্যারোলে মুক্তি চাই না, নিঃশর্ত মুক্তি চাই।’
খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি চাইবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘তিনি তো এই মামলায় জামিন পাওয়ার যোগ্য। তাহলে প্যারোলের প্রশ্ন আসছে কেন? আমরা সরকারকে বলব দেশনেত্রীর জামিনে যেন বাধা না দেয়া হয়।’
খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির প্রসঙ্গ ওঠার পর থেকে নানা গুঞ্জন বাতাসে বেড়াচ্ছে। সরকারের সঙ্গে বিএনপির আভ্যন্তরীণ একটি বোঝাপড়ার মধ্য দিয়েই খালেদা জিয়া কারামুক্ত হয়ে বিদেশে যেতে পারেন এমন আভাস দিচ্ছেন কেউ কেউ। যদিও সরকার বা বিএনপির কোনো সূত্রই এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলেনি।