মামলার জট নিয়ে উদ্বেগ প্রধান বিচারপতির

সুপ্রিমকোর্টে মামলার জট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেছেন, সুপ্রিমকোর্টে বর্তমানে এত মামলা যে ফাইল রাখার জায়গা নেই। এক কথায় ক্রিটিক্যাল অবস্থা। এভাবে চলতে পারে না। এর সমাধান বের করতে হবে।

রোববার সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চে একটি মামলার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

এ সময় আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শনিবার সুপ্রিমকোর্টের অডিটরিয়ামে জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটি ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশ (জিআইজেড) আয়োজিত দেশের মামলার বিচারসংক্রান্ত এক নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনটি প্রসঙ্গে মাহমুদ হোসেন বলেন, ডিআইজেডের উপস্থাপন করা সুপ্রিমকোর্টের মামলার নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেখে আমি প্রায় বিব্রত। এত মামলা! এভাবে চলতে পারে না।

তিনি বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি- মামলাজট নিরসন বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের সব বিচারপতিকে নিয়ে বসব। সবাইকে বলব যে, এ অবস্থায় কী করবেন, আপনারা দেখেন।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টে প্রায় পাঁচ লাখ ২৫ হাজার মামলা বিচারাধীন। ১৯৮২ সালে ছিল মাত্র ২৫ হাজার। আর আগাম জামিনের আবেদনগুলো যদি নিষ্পত্তি না করা হতো, তা হলে বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টে মামলার পরিমাণ ১০ লাখ ছাড়িয়ে যেত।

তিনি বলেন, প্রতিদিন মামলাজট বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে প্রতি ১০ লাখ লোককে মাত্র ১০ বিচারক বিচারিক সেবা দিচ্ছেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মামলা পারস্পরিক বোঝাপড়া বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। সেখানে বড়জোর ১০-১৫ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি হয় আদালতে। আর আমাদের দেশে চিত্র ঠিক এর বিপরীত।

‘এ দেশে কেবল ১০-১৫ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়ে থাকে বোঝাপড়া বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে। আর ৮৫-৯০ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয় আদালতে।’