বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ফের উইপোকার সাথে তুলনা অমিত শাহ’র

ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের এক-একজন করে চিহ্নিতকরণ করে তাদের বিতাড়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তার অভিমত, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা উইপোকার মতো দেশটাকে খেয়ে ফেলেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যটির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে দলের প্রার্থী ভারতী ঘোষের সমর্থনে এক নির্বাচনী জনসভা থেকে বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘গোটা দেশেই অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর জন্য আওয়াজ উঠেছে। দর্শক আপনারাই বলুন এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানো উচিত কি না? উত্তর এল হ্যাঁ।’ এরপর অমিত আবার বলেন, ‘আমরা এই অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বিতাড়ন করতে চাইছি, কিন্তু মমতা দিদি বলছেন শরণার্থীদেরকেও তাড়িয়ে দেওয়া হবে। মমতা দিদি শরণার্থীদের ভয় দেখাবেন না। আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই যে নরেন্দ্র মোদি নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল নিয়ে আসছেন। যত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, খ্রিস্টান শরণার্থী এসেছেন-তাদের সকলের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ ভারত সরকার করছে। আমরা প্রথমে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল নিয়ে আনবো, এরপর অনুপ্রবেশকারীদের এক-একজন করে চিহ্নিত করে বাংলার বাইরে বের করে দেবো। এই অনুপ্রবেশকারীরা উঁইপোকার মতো দেশটাকে খেয়ে ফেলেছে। দেশের সুরক্ষার ক্ষেত্রে এরা খুবই ভয়ানক। আমরা ওদের বিতাড়িত করবোই।’

তবে এবারই নয়, এর আগেও অনুপ্রবেশকারীদের উইপোকার সাথে তুলনা টেনে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অমিত শাহ।

এদিন, মমতার সরকারকে উন্নয়ন বিরোধী বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ রাজ্যে কোন নতুন শিল্প হচ্ছে না। বোম বানানোর সরকার কেবল বাংলার মানুষকে ভয় দেখানোর কাজ করছে। আপনারা একবার নরেন্দ্র মোদিকে ২৩টি আসনে জিতিয়ে দিন, এ রাজ্যের মানুষকে মমতার সন্ত্রাসের হাত থেকে মুক্ত করে দেবো।’

মোদি সরকার বাংলার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন বলেও এদিন জানান অমিত শাহ। তার অভিমত, ‘সোনিয়া-মনমোহনের ইউপিএ সরকার বাংলার উন্নয়নে ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি রুপি দিয়েছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে মোদি সরকার এ রাজ্যকে ৪ লাখ ২৪ হাজার ৮০০ কোটি রুপি দিয়েছে।’

সভায় উপস্থিত সকলের কাছে অমিতের প্রশ্ন এই রুপি কি মানুষের কাছে পৌঁছেছে? উত্তর এল, না। তারপরই অমিতের অভিযোগ এই রুপি সিন্ডিকেট খেয়ে নিয়েছে। এখানে সবকিছুতেই সিন্ডিকেট ট্যাক্স দিতে হয়। আগে এই ট্যাক্সের রুপি তৃণমূলের গুণ্ডাদের কাছে, আর এখন ট্যক্সের রুপি ভাতিজার (অভিষেক ব্যানার্জি) কাছে চলে যাচ্ছে। ভাতিজা সেই অর্থ বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।’

ভগবান রামের নাম শুনে মমতা ব্যানার্জির রেগে যাওয়া প্রসঙ্গটিও এদিন উত্থাপন করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘আমি তিনদিন ধরে দেখছি যে, এ রাজ্যে জয় শ্রী রাম বললেই মমতা দিদির রাগ হচ্ছে। আপনারাই বলুন যে, ভারতের কোন প্রান্তে দেশের সংস্কৃতির প্রতীক, যার জীবন দেশের মানুষের প্রতি সমর্পিত করেছিলেন সেই রাজা রাম চন্দ্রের নাম নেওয়া কি আটকাতে পারে? আমি মমতা দিদিকে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, রামের নাম ভারতে নেবো না তো কি পাকিস্তানে গিয়ে নেবো?’ এ সময় জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘মমতা দিদি আমি এই মঞ্চ থেকে রামের নাম নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আপনার যে কোন আইনে মামলা চাইলে আপনি করতে পারেন। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতির বিরোধিতা করতে পারেন না।’