সোমবার থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

বকেয়া বেতন, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে আগামী সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি পাটকলের শ্রমিকরা। ধর্মঘট চলাকালে তারা প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজপথ-রেলপথ অবরোধ এবং রাজপথে ইফতার করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

গত বুধবার দুপুরে ঢাকার বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) কার্যালয়ে পাটকল শ্রমিক লীগ ও সিবিএ ও নন সিবিএর বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯টি পাটকলের চলমান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন আলীম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম লিটু।

বাংলাদেশ জুটমিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা জোনে মোট ২৬টি পাটকল রয়েছে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম জোনে রয়েছে নয়টি বড় পাটকল। শ্রমিকরা বলছেন, বিজেএমসির আওতাধীন জুট মিলগুলোতে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া আছে। এছাড়াও ২০১৫ সালে ঘোষিত মজুরি কমিশন এখনও চালু করা হয়নি।

এর আগে গত এপ্রিলে একই দাবিতে ধর্মঘটে নামেন বিজেএমসির অধীন পাটকলের শ্রমিকরা। চট্টগ্রাম, খুলনা ও নারয়ণগঞ্জের সরকারি বিভিন্ন পাটকলের শ্রমিকরা ধর্মঘট চলাকালে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষেরা। পরে দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে তিনদিন পর তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন।

তবে শ্রমিক নেতারা বলছেন, তাদের কোনও দাবি এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি। খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের ১২ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার নিয়ে তাদের দিন কাটছে। এ অবস্থায় তাদের আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। পাওনা টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নেতারা।

এদিকে পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসর প্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ, চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহাল, সকল মিলে সেটআপের অনুকূলে শ্রমিক-কর্মচারীদের শূণ্য পদের বিপরীতে নিয়োগ ও স্থায়ীসহ ৯ দফা দাবিতে খুলনার শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে গত ৫ মে থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন।