কাশ্মীরে আরও অস্থিরতার আশঙ্কা

কাশ্মীর উপত্যকার প্রধান শহর শ্রীনগরের স্কুলগুলো খুললেও অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বাড়িতে রেখে দেওয়ায় স্কুলগুলোর অধিকাংশ শ্রেণিতেই কোনো শিক্ষার্থী ছিল না।

সোমবার শ্রীনগরের স্কুলগুলো ঘুরে এমন দৃশ্য দেখেছেন বলে জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সাংবাদিকরা।

তারা নগরীর দুই ডজনেরও বেশি স্কুল পরিদর্শন করে শ্রেণিক্ষগুলো ফাঁকা ও সেখানে অল্প কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত আছেন বলে দেখতে পেয়েছেন।

জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বিলোপ করার ভারত সরকারের সিদ্ধান্তে জেরে আরও অস্থিরতা দেখা দিতে বলে আশঙ্কা করছেন ‍শ্রীনগরের বাসিন্দারা।

জম্মু ও কাশ্মীরে বড় ধরনের প্রতিবাদ বিক্ষোভ ঠেকাতে সেখানে নজিরবিহীন বিধিনিষেধ জারি করেছিল ভারতীয় কর্তৃপক্ষগুলো। বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ার পর শ্রীনগরের প্রায় ১৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলেছে। কিন্তু অধিকাংশ স্কুলেই শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার অত্যন্ত কম ছিল।

এক শিক্ষক বলেছেন,“এ রকম সহিংস পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসবে কীভাবে? সরকার ছোট ছোট এই শিশুদের কামানের গোলার মুখে ঠেলে দিয়েছে।”

পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

অভিভাবকরা জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক চালু হলে সন্তানদের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখতে পারবেন তারা, তখন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাবেন, তার আগ পর্যন্ত তাদের সন্তানরা বাসায়ই থাকবে।

শহরের বাতামাল্লো এলাকার একটি স্কুলের দুই শিক্ষার্থীর বাবা গুলজার আহমেদ বলেন,“কীভাবে আমরা সন্তানদের জীবনের ঝুঁকি নিবো?”

এর আগে বাতামাল্লো এলাকায় কয়েকবার ভারতবিরোধী প্রতিবাদ হয়।

তিনি বলেন, “গত সপ্তাহগুলোতে সৈন্যরা ছোট ছোট শিশুদেরও গ্রেপ্তার করেছে এবং কয়েকটি শিশু আহতও হয়েছে। বাড়ির ভিতরে শিশুরা নিরাপদ আছে। তারা স্কুলে গেলে কে তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিবে?”

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষগুলোর কাউকে পাওয়া যায়নি, তবে এর আগে যথেচ্ছ গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করেছিল তারা।

৫ অগাস্ট এক ঘোষণায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে অঞ্চলটিকে পুরোপুরি ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি ভারতের অন্যান্য অংশের নাগরিকদের জন্য অঞ্চলটির জমি কেনার ও সরকারি চাকুরির প্রার্থী হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করে দেয়।

সমালোচকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বহু কাশ্মীরিকে আরও দূরে ঠেলে দিবে এবং সেখানে ৩০ বছর ধরে চলা বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহ আরও জোরদার হবে।

রোববার শ্রীনগরের বাসিন্দারা ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাথর ছুড়েছে এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এতে বহু লোক আহত হয়েছেন বলে দুই জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।