সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে এনরিকের মেয়ে

দুই মাস আগে আচমকাই স্পেনের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বার্সেলোনার সাবেক কোচ লুইস এনরিকে। একমাত্র কারণ, মেয়ের ক্যান্সার। এর আগে তিন মাস ধরে হাড়ের ক্যান্সারে ভুগছিল ছোট্ট জানা। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, নিজের ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়েও ৯ বছরের ছোট্ট কন্যাশিশুটিকে বাঁচাতে পারলেন না এনরিকে। সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে পিতাকে কাঁদিয়ে ওপারে চলে গেল এনরিকের মেয়ে।

জানা যায়, মার্চের ২৬ তারিখ, স্পেনের কোচ হিসেবে তখন বেশ জাঁকিয়ে বসেছেন এনরিকে। মাল্টায় ফুরফুরে মেজাজে দলের অনুশীলন তদারক করছিলেন। হঠাৎ এক ফোনে সব বদলে গেল। তার স্ত্রী ফোনে জানালেন তাদের প্রিয় কন্যা হাড়ের ক্যান্সারে (অস্টিওসার্কোমার) আক্রান্ত হয়েছে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল যেন।

মেয়ের অসুস্থতার খবর শুনে দ্রুত দেশে ফিরে যান এনরিকে। তাকে নিতে বার্সা থেকে বিশেষ প্লেনের ব্যবস্থাও করা হলো। সেই যে গেলেন, প্রায় তিন মাস পর (১৯ জুন) শুধু পদত্যাগপত্র পাঠানো ছাড়া তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পদত্যাগপত্রে ফেডারেশন, খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ এবং মিডিয়াকে ধন্যবাদ জানালেও কেন সরে দাঁড়াচ্ছেন তা পরিষ্কার করেননি এনরিকে। শুধু বলেছিলেন ‘পারিবারিক কারণ’।

অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে এক টুইটে কন্যার মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে এনরিকে লেখেন, ‘প্রায় ছয় মাস হাড়ের ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে আজ বিকেলে আমাদের কন্যা জানা মাত্র ৯ বছর বয়সে পরপারে পাড়ি জমিয়েছে। এই কয়েকমাসে যারা ভালোবাসা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে আমাদের পাশে থেকেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ।’

২০১৪-১৫ মৌসুমে বার্সেলোনাকে ‘ট্রেবল’ জেতানো এনরিকের এই অপূরণীয় ক্ষতিতে শোক প্রকাশ করেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ ও অন্যান্য ক্লাব। আর খেলোয়াড়দের মধ্যে লিওনেল মেসিসহ তার কয়েকজন বার্সা সতীর্থ এমনকি টেনিস তারকা রাফায়েল নাদালও যোগ দিয়েছেন শোক প্রকাশের মিছিলে।

এনরিকের টুইটের জবাবে স্পেন জাতীয় দল ও রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস লিখেছেন, ‘আপনার এবং আপনার পরিবারের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন ও ভালোবাসা রইলো। কিছু বলার নেই, কিন্তু আপনি সবসময় আমাদের পাশে পাবেন।’

বার্সা অধিনায়ক মেসি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘এই কঠিন সময়ে লুইস এনরিকে ও তার পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। পৃথিবীর সকল শক্তি নিয়ে আমরা আপনার পাশে আছি।’