চাঁদের বুকে ভেঙেই পড়েছিল ‘বিক্রম’

চাঁদের বুকে আছড়েই পড়েছিল চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার বিক্রম। সেই অবতরণ স্থলের একটি ছবি টুইট করে এমনটাই দাবি করল নাসা।

তবে ঠিক কোন জায়গায় বিক্রম ভেঙে পড়েছে সেটা এখনও স্পষ্ট নয় বলেও জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থাটি।

যে ছবি নাসা প্রকাশ করেছে, সেটি গত ১৭ সেপ্টেম্বর তুলেছিল তাদের লুনার রিকনয়সাঁ অরবিটার (এলআরও)।

নাসা জানিয়েছে, ছবিটি সন্ধ্যাবেলায় তোলার জন্য বিজ্ঞানীরা বিক্রমের সঠিক অবস্থান চিহ্নিত করতে পারেননি।

তবে আগামী অক্টোবরে এলআরও ফের ছবি তোলার চেষ্টা করবে বলেও জানিয়েছে নাসা।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, গত ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সিম্পেলিয়াস এন এবং ম্যানজিনাস সি ক্রেটারের মাঝে সমতলভূমিতে অবতরণের কথা ছিল ল্যান্ডার বিক্রমের। কিন্তু চাঁদের মাটি ছোঁয়ার আগেই সেটার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ইসরোর গ্রাউন্ড স্টেশনের।

তারপর থেকেই একটা দোলাচল তৈরি হয়েছিল বিজ্ঞানী মহলে। বিক্রম কি তা হলে হারিয়েই গেল! যদিও ইসরো প্রধান কে শিবন আশার কথা শুনিয়েছিলেন।

ইসরোর পক্ষে এমনও বলা হয়েছিল, বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, আশা ততই ক্ষীণ হয়েছে। বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের সম্ভাবনার শেষ দিন ছিল গত শনিবার। তার পর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রাত নেমে এসেছে। ফলে বিক্রমের ‘জীবিত’ থাকার যেটুকু আশা ছিল সেটাও শেষ হয়ে গেল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

বৃহস্পতিবারই চন্দ্রযান ২-এর পরিণতি নিয়ে বিশ্লেষণ বৈঠকে বসেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।

ইসরো প্রধান কে শিবন জানান, একটা জাতীয় পর্যায়ের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কেন ল্যান্ডারের থেকে কোনও সঙ্কেত পাওয়া যায়নি এবং এই মিশনে ঠিক কোথায় গলদ ছিল তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি। সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা হবে।

বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে ইসরো। সেটার উপরই কাজ চলছে বলে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন শিবন।

ইসরো প্রধান আরও বলেন, আমাদের পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ মিশন গগনযান।

গত ২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় চন্দ্রযান ২।

ইসরো সূত্রে জানানো হয়েছিল, চাঁদের পিঠ (লুনার সারফেস) থেকে ১০০ কিলোমিটার উপরের কক্ষপথে অরবিটার থেকে আলাদা হয়ে চাঁদের বুকে নামতে শুরু করবে ল্যান্ডার বিক্রম। সময় লাগত প্রায় ১৫ মিনিট। রোভারটিকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় দেড় টন ওজনের ল্যান্ডার খুব ধীরে পা ছোঁয়াবে (সফ্‌ট ল্যান্ডিং) চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ৭০ ডিগ্রি অক্ষাংশে। পরিকল্পনা মতো এই মিশনের সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ৭ সেপ্টেম্বরে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যখন হাজির হল, দুঃসংবাদটা তখনই পৌঁছেছিল ইসরোর গ্রাউন্ড সেন্টারে!