সেই প্রধান শিক্ষকের দৌড়ঝাপ শুরু, সাদা কাগজে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর গ্রহণ

‘টাকা ছাড়া মিলছে না জেএসসির প্রবেশপত্র!’ শিরনামে ‘ওয়ান নিউজ বিডি.কমে’ প্রকাশিত রিপোর্ট ধামাচাপা দিতে টেংরামারী হাইস্কুলের সেই প্রধান শিক্ষক প্রভাষচন্দ্র দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। বুধবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রিপোর্টটি প্রকাশ পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রিপোর্ট প্রকাশের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়ে তার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে তথ্য দেওয়ায় তিনি শিক্ষার্থীদের নানা ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দিয়েছেন। কিভাবে জেএসসি পরীক্ষায় পাশ করে বা পাশ করলেও কিভাবে আবার এই স্কুলে লেখাপড়া করে সেটা দেখে নেবেন বলে শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছেন তিনি। একইসাথে ক্লাসে গিয়ে এবং অফিসে ডেকে সহকারী শিক্ষক জয়নাল আবেদীন টিপু পরীক্ষার্থীদের নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এছাড়া সাড়া কাগজে দেড়শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে যারা প্রবেশপত্র সংগ্রহ করেছে আয়ার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকেও ৫০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

এদিকে টেংরামারী হাইস্কুল সংক্রান্ত প্রকাশিত রিপোর্টটি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্রের নজরে এসেছে। তিনি দ্রুত সরেজমিন বিষয়টি তদন্ত করবেন বলে জানিয়েছেন।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আয়া দিপালী হেড স্যারের রুমের দরজায় বসে ছিল। সে ৫০ টাকা করে নিয়ে তারপর প্রবেশপত্র আনতে ভিতরে ঢুকতে দিয়েছে। প্রবেশপত্র বা কোচিং এর জন্য কোন টাকা নেওয়া হয়নি বলে টিপু স্যার ও হেডস্যার সাদা কাগজে সবার স্বাক্ষর নিয়েছে। যাদের নাম পেপারে এসেছে তাদের অফিসে ডেকে পরীক্ষার হলে সুযোগ দেবেনা বলে বিভিন্ন ভয়ভীতি এবং পাশ করার পর স্কুলে পড়তে দেবে না বলে হুমকি দিয়েছে।

এক শিক্ষার্থী অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ের প্রবেশপত্র আনতে গেলে দেখি স্যাররা ওদের বকাঝকা করছে। আমি অফিসে ঢোকার পর আর কিছু বলিনি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র বলেন, কাউকে বকাঝকা করা হয়নি। এই বলে তিনি ফোন রেখে দেন। তবে,অপর এক সাংবাদিকের কাছে তিনি দেড়শ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

প্রসঙ্গত,মণিরামপুরের টেংরামারী হাইস্কুল থেকে এবার ৩৬ জন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। প্রবেশপত্র দেওয়ার নাম করে তাদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করেছেন প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র। এছাড়া কোচিং ক্লাসের নামে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীপ্রতি ২০০ টাকা নেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এই প্রধানের বিরুদ্ধে।