বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আজকে যদি একটি সুন্দর ও স্বাভাবিক নির্বাচন হয়, দেশের সকল মানুষ এক বাক্যে স্বীকার করবে যে, ধানের শীষে ভোট পড়বে ৮০ শতাংশ।
তবে বর্তমানে দেশে সেই পরিবেশ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী নবীন দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি’ শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মওদুদ আহমদ বলেন, আমাদের প্রায় ২৬ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা আছে ৯০ হাজার উপরে। কারও কারও বিরুদ্ধে শতাধিক মামলাও আছে। তারপরও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বেঁচে আছে, টিকে আছে। আমাদের নেত্রী জেলখানায়। আজকে প্রায় এক বছর আট মাসের উপরে হয়ে গেল। আর আমাদের নেতা সাড়ে ছয় হাজার মাইল দূরে। তারপরও বিএনপি আছে।
বিএনপিকে তারা (সরকার) নিঃশেষ করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার যখন ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে, তখন প্রথম এজেন্ডা ছিল বিরোধী দল নস্যাৎ করে দেওয়া। তারা কি পেরেছে? হয়তো আমরা ক্ষমতায় যেতে পারিনি, তারা জোর করে ক্ষমতায় গিয়েছে। কিন্তু বিএনপিকে কি নিঃশেষ করতে পেরেছে? পারেনি। আর কখনও পারবেও না।
মওদুদ বলেন, আলালের বিরুদ্ধে ১৯৩টি মামলা। আলাল বাড়িতে বসে থাকে? খোকনের বিরুদ্ধে ৭২টি মামলা, ফারুকের বিরুদ্ধে ৮৫টা এবং ২৩টা মামলা আমার বিরুদ্ধে। কিন্তু আমাদেরকে নিঃশেষ করতে পারেনি। সুতরাং যতই নির্যাতন ও নিপীড়ন করুক না কেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে রাজনীতি থেকে নিঃশেষ করা সম্ভবপর হবে না। তার কারণ হল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল।
বর্তমান সরকার দুর্নীতি ডুবে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বর্তমান দুর্নীতিপরায়ণ সরকারের পতন হতে বাধ্য এবং হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা খুবই চিন্তায় আছি। কখন আমরা আন্দোলন করব, বেগম জিয়াকে জেলখানা থেকে কবে আমরা মুক্ত করে আনব। কিন্তু বিচারবিভাগে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে আইনের মাধ্যমে বেগম জিয়া জামিন পেতে পারেন না। এর কারণ সরকারর চায় না বেগম জিয়া মুক্তি পাক। সুতরাং সরকার যখনই চাইবে তখনই মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু সরকার তো বেগম জিয়াকে মুক্তি দেবে না। কারণ তারা জানে, বেগম জিয়াকে মুক্তি দিলে তারা রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। অনেকে আমাকে বলে। আর আমি নিজেও বলি, হয়তো আর কোনও ভবিষ্যৎ নাই। ভবিষ্যৎ আছে। ভবিষ্যৎ হল আমাদের নবীন ও আমাদের দেশের মানুষরা। আর এই সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার। তাদের নিজেদের দুর্নীতির ভারে তাদের পতন হবে।
সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।