আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ মিয়ানমারের প্রত্যাখ্যান

রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার।

দেশটির সরকারের মুখপাত্র জাও তায়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কোনো অন্যায় হলে এর তদন্ত মিয়ানমার সরকার নিজস্ব তদন্ত কমিটি দিয়ে করবে। খবর আনাদোলুর। প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।

আইসিসির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিধনে সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটানো হয়ে থাকতে পারে।

মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ির পেছনে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হতে পারে। এ কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের পরিস্থিতি তদন্তের অনুমোদন দিয়েছে আইসিসি।

আইসিসির বক্তব্য হচ্ছে- আদালত সদস্য দেশের ভূখণ্ডে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে এখতিয়ারভুক্ত হিসেবে বিবেচনা করতে পারে।

মিয়ানমার সদস্য দেশ না হলেও বাংলাদেশ সদস্য। ২০১০ সালে আইসিসির রোম সনদ অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।

২০১৭ সালের আগস্টে সেনাবাহিনীর অভিযানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। অভিযানের নাম করে সেনাবাহিনী মূলত গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালিয়েছে।

জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এই অভিযানকে জাতিগত নিধনের চেষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার।

বৃহস্পতিবার প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন তদন্তের অনুমতি দিয়ে আইসিসির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।

এদিন সন্ধ্যায় নেদারল্যান্ডসের হেগেতে আইসিসির প্রাক-বিচারিক আদালত-৩ এক ঐতিহাসিক রায়ে ওই অনুমতি দেন। ফলে আইসিসির কৌঁসুলি তদন্ত শুরুর সবুজ সংকেত পেয়েছে।

এর আগে সোমবার আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। এর পরেই আইসিসি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি দিল।

কিন্তু ঐতিহাসিক ওই রায় দেয়ার একদিন পরই মিয়ানমার আদালতের ওউ রায়কে এখতিয়ারবহির্ভূত বলে অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করে।