‘অস্থিরতার গুঞ্জন’ থাকলেও এখনই পদত্যাগ নয়

বিএনপি নেতাদের মতবিরোধ আগে সংগঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও সম্প্রতি তা প্রকাশ্যে এসেছে। গুঞ্জন উঠেছে, দলটির সিনিয়র নেতাদের অনেকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন। তবে যাদের ঘিরে এ গুঞ্জন তারা বলছেন, দল ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

সম্প্রতি বিএনপি ছেড়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপি করে আসা এই জ্যেষ্ঠ নেতার পদত্যাগের পরদিনই দল ছাড়ার খবর আসে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমানের।

এ খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল। গয়েশ্বর-রিজভী ‘বিএনপিকে বড় দল’ উল্লেখ করে ‘এখান থেকে দু-চারজন গেলে কিছুই হয় না’ বললেও হাবিব-উন নবী খান সোহেলের মন্তব্য, ‘দলত্যাগীদের ভবিষ্যতে বিএনপি নিরাপত্তা দেবে না।’ প্রকাশ্য সভায় এসব কথা বলেন তারা।

এরই মধ্যে অন্তত পাঁচ-সাতজন সিনিয়র নেতার বিএনপি ছাড়ার গুঞ্জন ওঠে। যাদের পাঁচজনই ভাইস চেয়ারম্যান। তাদের মধ্যে আছেন- শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ও এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। এছাড়া অপর ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান দলে স্থায়ী কমিটির সদস্যপদ না পেয়ে হাইকমান্ডের ওপর বেশ ক্ষুব্ধ। বিক্ষুব্ধ নেতারা আলতাফ হোসেন চৌধুরীর বাসায় একত্রিত হয়ে বৈঠক করেন বলেও প্রচার পায়।

সূত্রের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে দল পরিচালনায় স্থায়ী কমিটির নেতা ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। স্কাইপেতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে ডেকে কথা বলেন। যার কোনো সিদ্ধান্ত এসব নেতা জানতে পারেন না। এসব কারণে তারা দলের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

অন্য একটি সূত্রের দাবি, নেতাদের পদত্যাগ এবং পদত্যাগের খবর ক্ষমতাসীনদের ষড়যন্ত্রের একটা অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে যে ষড়যন্ত্র হয়েছে, এটাও তার অংশ হতে পারে।

যেসব নেতাকে ঘিরে গুঞ্জন তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বলেন, ‘এটা একটা ভিত্তিহীন খবর, দল ছাড়ার জন্য আমি কোনো মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করিনি।’

আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমি নিজে থেকে অনেক নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই বলেছেন, এটা ভুয়া খবর।’

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যে দলে আছি, সে দল ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা আমার নেই।’

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে আব্দুল্লাহ আল নোমান উল্লেখ করেন, ‘নদীর সাথে যেমন মাছের সম্পর্ক, বিএনপির সাথে আমার তেমন সম্পর্ক।’