চিত্রা কলেজের ৩৭ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত, ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় যশোরের বাঘারপাড়ার চিত্রা মডেল কলেজের ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ৩৭ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণের সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে তাদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। চলতি মাসের ২ তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোর ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিগত বছরে এক ও দুই বিষয়ে অকৃতকার্যরা ফরম পূরণ করতে গেলে অধ্যক্ষ অস্বীকৃতি জানায়।

তবে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানিয়েছেন, অকৃতকার্য সকলেই ফরম পূরণ ও পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে।

এদিকে ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে কয়েকজন শিক্ষার্থী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে।

গেল বছরে অকৃতকার্য আব্দুল্লাহ খান, আকাশ, ইমন, সম্রাটসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, কলেজ থেকে এ বছর প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরীক্ষার সময় হাতেগোনা ৫/৭ জন অকৃতকার্যরা পরীক্ষা দিতে গেলে তাদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেই হবে কলেজ থেকে তাদের এমনটি জানানো হয়। তবে অকৃতকার্যরা নির্বাচনী পরীক্ষা না দিলেও ফরম ফিলাপের সুযোগ পায়, বিগত বছরগুলোতে এমনটাই হয়ে আসছে। আর এটা ভেবেই তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে না। এছাড়া নির্বাচনী পরীক্ষা কবে থেকে শুরু হবে এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের অবগত করেনি।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোহিনুর আলম জানান, নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও বিগত বছরগুলোতে শিক্ষার্থীরা ফরম ফিলাপের সুযোগ পায়। তবে চলতি মাসের ২ তারিখে যশোর শিক্ষাবোর্ড ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তিতে পূর্বের ঐ নিয়ম সংশোধিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, অকৃতকার্য শিক্ষার্থী যারা নির্বাচনী পরীক্ষায় উপস্থিত করবে না তারা ফরম ফিলাপের সুযোগ পাবে না। আর এ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তারা এবার ফরম ফিলাপের সুযোগ পাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্রের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চিত্রা কলেজের অধ্যক্ষের বিজ্ঞপ্তিটি বোঝার ভূল ছিল। তবে অকৃতকার্যরা সবাই ফরম পূরণ ও পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে।

এদিকে ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রমাণ মিলেছে। পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা জানায়, ২২শত টাকা থেকে ৩৭শত টাকা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপারে শনিবার শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। তবে কলেজের অধ্যক্ষ অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবী করেছেন।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার তানিয়া আফরোজ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই বিষয়টি আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেছি। তিনি অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপারে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোন প্রতিষ্ঠান বোর্ড নির্ধারিত ফি’র বাইরে কোন প্রকার খাত দেখিয়ে অতিরিক্ত একটি পয়সা আদায় করলে তার সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে কথা হলে বাঘারপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ তেজারত জানান, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছি এবং অতিরিক্ত অর্থ নিলে সেটি ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে।