জামাল খাশুগজি খুনের ঘটনায় সৌদিতে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

ইস্তাম্বুলের সৌদির কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশুগজির খুনের মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর তিন জনকে কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরবের আদালত।
ওই তিন জনকে মোট ২৪ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর শালান আল শালান এসব কথা জানিয়েছেন বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

এই মামলায় মোট ১১ জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। তারা সবাই সৌদি নাগরিক।

শালান আরও জানান, এ খুনের মামলায় সৌদি রাজপরিবারের সাবেক শীর্ষ উপদেষ্টা সৌদ আল কাহতানির বিরুদ্ধে তদন্ত করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি এবং তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

গতবছর ২ অক্টোবর দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন খাশুগজি। সেখান থেকে তিনি আর বের হননি। পরে জানা যায় তাকে কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করা হয়েছে।

তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে সৌদি আরবের কনস্যুলেট ভবন। এই ভবনের ভিতরেই সাংবাদিক খাশুগজিকে হত্যা করা হয়। ছবি: রয়টার্সতুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে সৌদি আরবের কনস্যুলেট ভবন। এই ভবনের ভিতরেই সাংবাদিক খাশুগজিকে হত্যা করা হয়। ছবি: রয়টার্সতার মৃতদেহ টুকরা টুকরা করে কনস্যুলেট ভবন থেকে সরিয়ে ফেলা হয় বলে খবর হয়েছে। খাশুজটির দেহাবশেষ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

খাশুগজি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন এবং তিনি সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক ছিলেন।

খাশুজির হত্যাকান্ডে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড়ে যুবরাজ মোহাম্মদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও পশ্চিমা সরকারগুলো জানায়, এই খুনের আদেশ স্বয়ং যুবরাজ মোহাম্মদ দিয়েছেন বলে তাদের বিশ্বাস।

কিন্তু এই ঘটনায় যুবরাজের কোনো ভূমিকা নেই বলে দাবি করেন সৌদি কর্মকর্তারা।

বিবিসি জানিয়েছে, খাশুগজির খুনের ঘটনাটিকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞ।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তা অ্যাগনেস ক্যালামার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকেও তদন্তের আওতায় আনতে বলেছিলেন।

কিন্তু এই হত্যার ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন সৌদি যুবরাজ। পরে চলতি বছরের অক্টোবরে তিনি বলেন, সৌদি আরবের নেতা হিসেবে এ হত্যাকাণ্ডের পুরো দায় নিচ্ছেন তিনি।