মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, জাতির বীর সন্তানদের সুবিধার কথা চিন্তা করে তাদেরকে মানসম্মত বাড়ি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার। আগামী বছরের মধ্যে দেশের ১৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সকলকে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাড়ি করে দেওয়া হবে। সেই লক্ষে ইতিমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়কে দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে যশোরের মণিরামপুরে তিনতলা বিশিষ্ট নবনির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন শেষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা কোথায় কোথায় কাদের সাথে যুদ্ধ করেছেন। পাকসেনা ও তাদের দোসর জামায়াত ইসলাম কিভাবে মানুষ হত্যা করেছে, মুক্তিকামী মানুষের উপর নির্যাতন করেছে এবং তাদের বাড়িঘর পুড়িয়েছে তার বিস্তারিত পাঠ্যপুস্তকে স্থান পাবে। আগামী বছর থেকে বিসিএস পরীক্ষায় শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধ ও তার পটভূমির উপর ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। একই সাথে এলাকাভিত্তিক দেশের সড়কগুলো মুক্তিযোদ্ধারের নামে নামকরণ করা হবে। মুক্তিযোদ্ধারা যেন সরকারি হাসপাতালগুলোতে ব্যবস্থাপত্রের সাথে ওষুধসহ সব ধরণের সেবা পান ইতিমধ্যে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে কখনও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেত না। যুদ্ধের সময় ও তার আগে বার বার কারাবরণ করেও তিনি এদেশের পক্ষে বিশ্বের সব মানুষের জনমত তৈরি করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপিরা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করেছে। অথচ মুজিবনগর সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন জিয়া।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছরের মধ্যে ৩০ বছর ক্ষমতায় ছিল বিএনপিসহ স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। আর মাত্র ১৯ বছর ক্ষমতা পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু পরবর্তী আওয়ামী লীগের এই স্বল্প পরিসরে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে বিশ্বের দরবারে দাঁড় করিয়েছেন শেখ হাসিনা। অথচ বিএনপি তাদের ৩০ বছরে দেশে তেমন কোন উন্নয়ন করেনি। যতটুকু করেছিল হাওয়া ভবন তৈরি করে তার সবটুকু লুটপাট করেছে। শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়া এয়াতিমের দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যার ফলে আজ তার এমন করুণ পরিণতি।
মণিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খয়রাত হোসেন, মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম, মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রাজেক আহমেদ, মণিরামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এমএম নজরুল ইসলাম প্রমুখ এসময় বক্তব্য রাখেন।