মুশফিকের অতিমানবীয় ব্যাটিং, তবু হারল খুলনা

রোবটের মতো চেষ্টা করলেন মুশফিকুর রহিম। ক্রিজে থাকাকালীন প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর চালালেন স্টিম রোলার। ব্যাটে ছোটালেন স্ট্রোকের ফুলঝুরি। তবু হার এড়াতে পারল না খুলনা টাইগার্স। ঢাকা প্লাটুনের কাছে ১২ রানে হেরে গেছে তারা।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় খুলনা। দলীয় ১১ রানে মাশরাফি বিন মুর্তজার শিকার হয়ে ফেরেন আমিনুল ইসলাম। তৎক্ষণাৎ সেই শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্লিন বোল্ড করে দেন তিনি। খানিক বিরতিতে শামসুর রহমানকে ফিরিয়ে দেন শাদাব খান। সেই জের না কাটতেই হাসান মাহমুদের শিকার হয়ে ফেরত আসেন হার্ডহিটার রাইলি রুশো। তাতে চরম বিপাকে পড়ে দক্ষিণের দলটি।

এখান থেকে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহিম। প্রথমে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে তোলেন তারা। মেলবন্ধন তৈরি হলে ঢাকা বোলারদের শাসাতে শুরু করেন এ জুটি। তবে হঠাৎ রানআউটে কাটা পড়েন জাদরান। বিদায়ের আগে ২৯ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ রান করেন তিনি। এর আগে মুশফিকের সঙ্গে ৫৬ রানের জুটি গড়েন এ আফগান।

তাতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে খুলনা। তবে সেই অবস্থায় আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি রবি ফ্রাইলিংক। হাসান মাহমুদের বলে তড়িঘরি ফেরেন তিনি। যদিও একপ্রান্তে মুশফিক তাণ্ডব চলতেই থাকে।

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সিলেট পর্বের তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি ঢাকা-খুলনা। শুক্রবার সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে ৪০ মিনিট দেরিতে গড়ায় খেলা। যাতে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন খুলনা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।

ফলে আগে ব্যাটিং করতে নামে ঢাকা। দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন আনামুল হক ও তামিম ইকবাল। তবে তারা বিচ্ছিন্ন হতেই চাপে পড়ে দলটি। দলীয় ৪৫ রানে মোহাম্মদ আমিরের বলে ব্যক্তিগত ২৫ রান করে ফেরেন তামিম। ড্যাশিং ওপেনারের পর শফিউল ইসলামের বলে দ্রুত ফেরেন আনামুল। সেই রেশ না কাটতেই আমিনুল ইসলামের কট অ্যান্ড বোল্ড হন মেহেদী হাসান। ফলে চাপে পড়ে ঢাকা।

বিপর্যয়ের মুখে দলের হাল ধরেন মমিনুল হক। আরিফুল হককে নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। পথিমধ্যে চাপ কাটিয়ে ওঠেন তারা। ক্রিজে সেট হয়ে যান এ জুটি। তাতে ঢাকার রানের চাকাও ঘুরে দ্রুতগতিতে। তবে হঠাৎ পথচ্যুত হন মুমিনুল। আমিরের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। ফেরার আগে ৩৬ বলে ৩ চারে ৩৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন পয়েট অব ডায়নামো।

ততক্ষণে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় ঢাকা। তাতে বাড়তি জ্বালানি জোগান আসিফ আলি। ক্রিজে নেমেই ঝড় তুলেন তিনি। খুলনা বোলারদের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান পাকিস্তানি রিক্রুট। অপর প্রান্ত আগলে রাখেন আরিফুল। সুযোগ পেলে তিনিও তোপ দাগান। তাতে বনবন করে ঘুরে প্লাটুনদের রানের হুইল। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭২ রান জোগাড় করেন তারা।

মাত্র ১৩ বলে ৪ ছক্কার বিপরীতে ২ চারে হার না মানা ৩০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন আসিফ। ৩০ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন আরিফুল। টাইগার্সদের হয়ে ২ উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির।