ইভিএমকে বঙ্গোপসাগরে ফেলতে হবে: আ স ম রব

ঢাকার সিটি নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা আ স ম আব্দুর রব বলেছেন, ইভিএমে ভোটের গোপনীয়তা থাকে না। ভোটারদের কাছে কোনো প্রমাণ থাকে না। একটি সত্যিকারের গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘন। তাই ইভিএমকে বুড়িগঙ্গায় নয়, বঙ্গোপসাগরে ফেলতে হবে।’

শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য পড়ার পাশাপাশি এসব কথা বলেন তিনি।

ইভিএম সংবিধানবিরোধী উল্লেখ করে রব বলেন, ‘বাংলাদেশ সংবিধানে নির্বাচন সম্পর্কে প্রকাশ্যে পেপার ব্যালটের কথা বলা আছে। বলা হয়েছে, ভোটের গোপনীয়তা রক্ষিত হবে। কিন্তু ইভিএমে ভোটের গোপনীয়তা থাকে না। ভোটারদের কাছে কোনো প্রমাণ থাকে না।

তিনি বলেন, ‘সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস নেই। সে কারণে সুষ্ঠু ভোট ছাড়াই ক্ষমতা দখল ও চিরস্থায়ী করার নিত্যনতুন কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। জনগণকে নানাভাবে হয়রানি, ভয়ভীতি, সন্ত্রাস ও গ্রেফতারের মাধ্যমে নির্বাচনবিমুখ করা হয়েছে। নির্বাচনে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। সেই ফাঁদের একটি হচ্ছে ইভিএম।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনো যন্ত্র বা প্রযুক্তি চলে মানুষের কমান্ডে। কিন্তু যারা কমান্ডে আছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইভিএমের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করবে-এ কথা বলাই বাহুল্য। ইভিএমে প্রযুক্তি ও তথ্য পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে মধ্যরাতে ভোটের ধারাবাহিকতায়।

ঐক্যফ্রন্টের এ নেতা বলেন, ইভিএম সত্যিকারের গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘন। জনগণ সব ক্ষমতার মালিক। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণ সেই মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। তারা সুষ্ঠু ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেন। কিন্ত বর্তমানে দেশে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। ভোট ছাড়াই নির্বাচন ও সরকার গঠিত হচ্ছে।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে কলঙ্কলেপন করেছেন। ২০২০ সাল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর বছর। এই বছর আর ভোট কারচুপি না করে পদত্যাগ করুন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্প ধারার সভাপতি ড. নুরুল আমিন বেপারী, জেএসডির সানোয়ার হোসেন, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।