কেশবপুরে একটি ভবনের পাঁচতলার অবৈধ অংশ ভাঙার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

যশোরের কেশবপুরে পৌরসভার নকশা বহির্ভূতভাবে জোড়াতালি দিয়ে একটি বহুতল ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটির অবকাঠামো ভঙ্গুর হওয়ায় আশপাশের বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। ইতোপূর্বে ভবনের অবৈধ অংশ নিজ খরচে অপসারণের নির্দেশ দিয়ে ভবন মালিককে জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়র ৭ দফা নোটিস প্রদান করলেও তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে। ওই ভবনের অবৈধ অংশ ভাঙার দাবিতে শনিবার শহরের করিম প্লাজার সত্ত্বাধিকারী কামরুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি বলেন, ২০০৭ সালে কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল গ্রামের শওকত হোসেন তাঁর স্ত্রী জোহরা খাতুনের নামে মধুসড়কে ২.৯০ শতক জমির ওপর “জান্নাতুল মাওয়া মঞ্জিল” নামে একটি ৫ তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। অথচ তিনি পৌরসভা থেকে ৪ তলা ভবন তৈরির অনুমতি নিয়েছিলেন। ১৪ ফুট প্রস্থ ও ৯০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ওই জমিতে প্লানের বাইরে অবৈধভাবে ৫ তলা ভবন নির্মাণের বিষয়টি আশপাশের ভবন মালিকদের ভাবিয়ে তোলে। বর্তমান ওই ভবনের ৬ তলার কাজ চলমান রয়েছে। ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের ব্যাপারে আশপাশের ভবন মালিকরা জেলা প্রশাসক, কেশবপুর পৌরসভার মেয়রসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।

তিনি আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবনটি ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর পৌরসভার নির্দেশে কাজ কিছুদিন বন্ধ ছিলো। কিন্তু ২০ নভেম্বর থেকে আবারও ৫ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এতেও ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ না হওয়ায় ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারী যশোরের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। ওই বছরের ২০ মার্চ জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার শাখার সহকারি কমিশনার ইরুফা সুলতানা ভবনের অবৈধ অংশটুকু নিজ খরচে অপসারণের নোটিস দেন ঘর মালিককে। এর অনুলিপি দেয়া হয় কেশবপুর পৌরসভার মেয়রকে।
কিন্তু এ নির্দেশের এক মাস অতিবাহিত হলেও ভবনের অবৈধ ৫ তলার অংশটুকু অপসারণ করা হয়নি। বরং ভবনের মালিক ওই অংশটুকু বহাল রাখতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে দেনদরবার করছেন। এ ঘটনায় আশপাশের ভবন মালিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে আশঙ্কা করছেন, পৌরসভার নকশা বহির্ভূতভাবে জোড়াতালি দিয়ে ভবনটি নির্মাণ করায় আশপাশের বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। ভবনটি যখন তখন তাদের বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। বিধায় জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এদিকে, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারী পৌরসভার এক সভায় ওই ভবনের অবৈধ অংশ অপসারণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ভবন মালিককে অবৈধ অংশ অপসারণ করে পৌর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ভবন মলিক এ নোটিসের কোন তোয়াক্কা না করে অবৈধ অংশের জানালা, দরজা ও গ্রীল লাগানোর কাজ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটির অবৈধ ৫ম তলা অপসারণের জোর দাবি জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আশপাশের ভবন মালিক আতাউর রহমান, নিরঞ্জন নন্দন, আলী আকবার, কামরুজ্জামান, জাকির হোসেন, কানাই নন্দী, অরুন দাস প্রমুখ।

এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম গ্রামের কাগজকে জানান, শওকত আলীকে ৪ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তিনি প্লানের বাইরে অবৈধভাবে ৫ তলা সম্পন্ন করেছেন। তাকে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষসহ পৌরসভার পক্ষে থেকে পৃথক নোটিস দিয়ে নিজ খরচে অবৈধ অংশ অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক যদি প্রশাসনিক সহযোগিতা করেন তাহলে ওই ভবনের অবৈধ অংশ উচ্ছেদ করা সহজ হবে।