যশোরে শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

যশোরে ৫২তম শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়েছে। সোমবার জাতীয় ছাত্রদল যশোর জেলা কমিটির উদ্যোগে জেলা কার্যালয়ে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস।

সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট যশোর জেলা সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ যশোর জেলা সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণালাল সরকার, বাংলাদেশ হোটেল রেষ্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন সদর থানা সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব হোসেন,গনতান্ত্রিক মহিলা সমিতির জেলা আহবায়ক ফরিদা পারভীন, যুগ্ম-আাহবায়ক পারভীন সুলতানা, জাতীয় ছাত্রদলের জেলা সদস্য মধুমঙ্গল বিশ্বাস, নিদ্রিতা আফরোজ প্রমুখ।

সভায় বক্তরা বলেন, রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নিবেদিত প্রাণ আসাদ গরীব ও অসহায় ছাত্রদের শিক্ষার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বদাই সজাগ ছিলেন। সেইসাথে এদেশের শ্রমিক – কৃষক তথা মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর ছিল গভীর মমত্ববোধ। যেকারণে ছাত্ররাজনীতি করার সময়ে তিনি কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। তার ধারাবাহিকতায় ১৯৬৯ সালে ১১দফার দাবি উপস্থাপন করেন এবং প্রবল ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে ২০ জানুয়ারি, ১৯৬৯ তারিখ দুপুরে ছাত্রদেরকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পার্শ্বে চাঁন খাঁ’র পুল এলাকায় মিছিল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন আসাদুজ্জামান। পুলিশ তাদেরকে চাঁন খাঁ’র পুলে বাঁধা দেয় ও চলে যেতে বলে। কিন্তু বিক্ষোভকারী ছাত্ররা সেখানে প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান নেয় এবং আসাদ ও তার সহযোগীরা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। ঐ অবস্থায় খুব কাছ থেকে আসাদকে লক্ষ্য করে এক পুলিশ অফিসার গুলিবর্ষণ করে। তৎক্ষণাৎ গুরুতর আহত অবস্থায় আসাদকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যু পরবর্তী ছাত্র-জনতা কর্তৃক আসাদের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে হাজারো ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে পুনরায় মিছিল বের করে এবং শহীদ মিনারের পাদদেশে জমায়েত হয়। কেন্দ্রীয় প্রতিরোধ কমিটি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করে। ধর্মঘটের শেষ দিনে পুলিশ পুনরায় গুলিবর্ষণ করে। ফলশ্রুতিস্বরূপ আসাদের মৃত্যুতে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান সরকার দু’মাসের জন্য ১৪৪-ধারা আইনপ্রয়োগ স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়।