ভারতের নিজস্ব ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা

ভারত সম্প্রতি তাদের নিজস্ব ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের উন্নয়ন শেষ করেছে এবং সবগুলো পরীক্ষায় সফলভাবে তারা শেষ করেছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী এবং এই সিস্টেমের উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশান (ডিআরডিও) রাজধানী নয়াদিল্লীর কাছে এই সিস্টেম স্থাপনের জন্য অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে, যেটা শেষ হতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে।

ভারত দীর্ঘ সময় ধরে নিজস্ব মিসাইল-বিধ্বংসী সিস্টেম তৈরির চেষ্টা করে আসছে, এবং এমনকি বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে একটি সমন্বিত ও বর্ধিত কমিটিও তৈরি করেছে যারা এ প্রযুক্তি, যুদ্ধ সক্ষমতা ও এটা স্থাপনের ব্যায় নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করবে এবং যে প্রতিরক্ষা সিস্টেম পুরো দেশকে সুরক্ষা দেবে। তারা দুই ধাপের একটি কৌশল নিয়েছে, যার অর্থ হলো থিয়েটার/ট্যাকটিক্যাল ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম যেটার প্রযুক্তির মাত্রা কিছুটা নিম্ন এবং যেটা প্রথমে মোতায়েন করা হবে। এরপর এটাকে উন্নয়ন করে ধীরে ধীরে স্ট্র্যাটেজিক প্রতিরক্ষা সিস্টেমে উন্নীত করা হবে।

দেশে তৈরি মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের সফল উন্নয়ন সে কারণে ভারতের লক্ষ্য অর্জনের পথে একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, যেটা ভারতের নিজস্ব স্টাইলের প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক তৈরির ভিত্তি তৈরি করে দিলো এবং যেটা দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষায় তাদেরকে সাহায্য করবে।

কিন্তু, মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম খুবই জটিল প্রকল্প এবং এটার মাধ্যমে একটা দেশের সার্বিক শক্তি প্রদর্শিত হয়। এবং এ জন্য মিসাইল-বিরোধী আগাম ওয়ার্নিং সিস্টেম, মিসাইল ইন্টারসেপশান সিস্টেম এবং কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম নিয়ে একটা মজবুত টেকনিক্যাল ভিত্তি আগে তৈরি করতে হয়। এবং এই সবগুলো ক্ষেত্রেই ভারতের নিজস্ব বলতে কিছুই নেই। রাশিয়ার, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল এবং অন্যান্য দেশগুলোর শক্তিশালী মিসাইল-বিরোধী সক্ষমতা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে ভারতের প্রযুক্তি বহু পেছনে পড়ে আছে এবং তাদের রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টেও মধ্যেও অনেক প্যাঁচ রয়েছে। তাছাড়া, তারা খুব অল্পই পরীক্ষা চালিয়েছে, প্রযুক্তি সম্পূর্ণ বোঝার জন্য যেটা মোটেই যথেষ্ট নয়।

তাছাড়া, ভারত তাদের সকল এন্টি-মিসাইল পরীক্ষায় খুবই রক্ষণশীল পরিকল্পনা নিয়ে এসেছে। যে টার্গেটের লঞ্চিং স্পট, সেটা কোন পথে যাবে, সেটার উচ্চতা এবং ব্যালিস্টিক প্যারিমিটার – সবকিছু জানা, এবং যেটা তার গতিপথে দিক বদল করেনি, এ রকম টার্গেটেই শুধু পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। এ রকম ‘ফিক্সড টার্গেটে’ পরীক্ষা চালিয়ে যুদ্ধে সক্ষমতা অর্জন করা যায় না। তাছাড়া মিসাইল সিস্টেমের সত্যিকারের সক্ষমতাও এতে পরীক্ষা করা যায় না। সে কারণে এই সব পরীক্ষার ফলের উপর ভরসা করার কোন উপায় নেই। সূত্র: এসএএম।