শহিদদের স্মরণে নড়াইলে লাখো মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এ স্লোগান নিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে ভাষা শহিদদের স্মরণে প্রজ্জ্বলন করা হয়েছে এক লাখ মঙ্গল প্রদীপ।

স্কয়ারের আর্থিক সহযোগিতায় ‘নড়াইল একুশের আলো’ ভাষা শহিদদের স্মরণে শুক্রবার সন্ধ্যায় এ মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ১৯৯৮ সাল থেকে নড়াইলে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করা হচ্ছে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে এবারের এ মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানটি বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।

নড়াইল একুশের আলোর আহ্বায়ক প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা। আরও বক্তব্য রাখেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নাট্য ব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার প্রমুখ।

সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ২১শে’র সন্ধ্যায় শুরু হয় এক লাখ মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন। সন্ধ্যা ঠিক ৬টা ১০মিনিটে নড়াইলের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গান পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে। সে সঙ্গে ভাষা দিবসের ৬৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ৬৯টি ফানুস উড়িয়ে দেয়।

মুন্সী হাফিজুর রহমান আরও বলেন, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা মুক্ত সুখী সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধারণ করে প্রতি বছর আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানের। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর মুক্তির আলোকচ্ছটায় দীপ্যমান হয়ে উঠুক এ কামনা আমাদের।

নড়াইল একুশের আলোর সদস্য সচিব নাট্যব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। একুশের এ মঙ্গল প্রদীপের আলোয় দূর হবে সকল অন্ধকার। এ উদ্দেশ্য নিয়েই আমাদের এ আয়োজন।

প্রতি বছরের মতো এবারও নড়াইলবাসী, ঢাকাসহ নড়াইলের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী এ মনোরম দৃশ্য উপভোগ করেন।