মণিরামপুরে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন

যশোরের মণিরামপুরে প্রাইভেট পড়তে এসে ইকলাস হোসেন (১৯) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে পৌনে ৭ টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটে।

বিচ্ছেদ হওয়া প্রেমিকার সাথে ইকলাসের নতুন সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে মৃদুল নামে অপর এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ।

লাশের কপালে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃদুল তাকে হত্যা করে লাশ উপজেলার পলাশী মোড় জামে মসজিদের পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। হত্যার পুরো ঘটনাটি পলাশী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিসি ফুটেজে ধরা পড়েছে। পুলিশ আলামত হিসেবে সিসি ফুটেজটি উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে।

এই ঘটনায় ইকলাসের নানা আইয়ার আলী বাদি হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মণিরামপুর থানায় মৃদুলসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মৃদুল মণিরামপুরের এড়েন্দা গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে। সে এবার পলাশী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

নিহত ইকলাস হোসেন বাঘারপাড়ার যাদবপুর গ্রামের আবু হানিফের ছেলে। পাঁচ বছর বয়স থেকে সে যশোর সদরের রুদ্রপুর গ্রামে নানা আইয়ার আলীর বাড়িতে থাকত। রুদ্রপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে বাণিজ্য শাখায় তারও আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। প্রতিদিন সকালে মণিরামপুরের বাসুদেবপুর গ্রামে ইব্রাহিম নামে এক প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে আসত ইকলাস। মঙ্গলবার সকালেও পড়ার উদ্দেশ্যে নানা বাড়ি থেকে বের হয় সে।
পলাশী কলেজেরই এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সাথে মৃদুলের প্রেমের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয় ৫-৬ মাস আগে। এরপর ইকলাসের সাথে সেই ছাত্রীর সম্পর্ক হয়। প্রতিদিন সকালে ইকলাস ও সেই ছাত্রী একসাথে প্রাইভেট পড়তে যেতো। মঙ্গলবার সকালে সেই ছাত্রীর সামনে থেকে ধরে নিয়ে ইকলাসকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মণিরামপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, পলাশী হাইস্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে মঙ্গলবার সকালে ইকলাস পলাশী হাইস্কুলের সামনে পৌঁছুলে এক জন তাকে জামার কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে ওই স্কুলের মাঠে নিয়ে মারপিট করে। একপর্যায়ে স্কুলের দেওয়ালের সাথে মাথায় আঘাত করলে ইকলাস অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পরে তাকে টানতে টানতে স্কুলের পাশের মসজিদের কাছে নিয়ে বুকের উপরে উঠে পাড়াতে থাকে সে। এতে ইকলাসের মৃত্যু হলে পালিয়ে যায় সেই যুবক।

শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, এই ঘটনায় মৃদুল নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। একটি ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্কের সূত্রধরে এই খুন হতে পারে। আমরা সেই ছাত্রীর সাথে কথা বলেছি। সে প্রেমের বিষয়টি স্বীকার করেনি। তাকে মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে। মৃদুল পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।