মেলামেশা কাছে আসা ভুলে যান, প্রেম করুন অনলাইনে

lifestyle

মহামারী করোনাভাইরাসে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্ব। বার, রেস্তোরাঁ, ক্লাব, পার্ক, সমুদ্র সৈকত- সবই বন্ধ। তাই বলে তো বন্ধ থাকতে পারে না প্রেম, ভালোবাসা, মনের ভাব আদান-প্রদান।

পশ্চিমা ডেটিং সাইটগুলো যুগলদের ঘরে থেকেই কিভাবে প্রেম করতে হবে তার অভিনব সব কৌশল শেখাচ্ছে, পরামর্শ দিচ্ছে।

সরাসরি ‘বাহুবন্দি প্রেম’ বাদ দিয়ে ভার্চুয়াল প্রেমের প্রতি উৎসাহিত করছে তারা। কোনো কোনো সাইটের পরামর্শ- মেলামেশা, কাছে আসা ভুলে যান, প্রেম করুন অনলাইনে। কেউ বলছে, আসুন একসঙ্গে কোয়ারেন্টিনে যাই।

শীর্ষস্থানীয় ম্যাচমেকার ওকেকিউপিড টুইটারে বলছে, ‘এখন বারে বসে ডেটিং করার সময় নয়। ফেসটাইম, স্কাইপি, কল, আমাদের বার্তা পাঠানো অ্যাপ… সবই এখন বেশ রোমান্টিক।’

যুক্তরাষ্ট্রের ডেটিং সাইটগুলো এএফপিকে তাদের ব্যবহারকারীর সঠিক সংখ্যা দিতে অস্বীকার করেছে। তবে ফরাসি বার্তা সংস্থাটি বলছে, গত সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলো লকডাউন শুরু হতেই ডেটিং সাইটগুলোর ব্যবহারকারীও কমে গেছে।

ডেটিং সাইট কফি মিট বাগেল (সিএমবি) কিছু ভিন্নমাত্রার ভার্চুয়াল প্রেম কৌশল আবিষ্কার করেছে। এর মধ্যে অনলাইন ভিডিও গেম ডেট অন্যতম। সাইটটির নির্বাহী প্রধান ডাউন ক্যাং বলেন, ‘বিকল হয়ে পড়া এই মুহূর্তে আমাদের বিকল্প কিছু ভাবতে হচ্ছে।’

সিএমবি একটি অনলাইন যৌথ সংলাপেরও আয়োজন করতে যাচ্ছে, যেটি এর আগে কখনও হয়নি। ওকেজুমার নামের একটি সাইট অবরুদ্ধ থাকা বৃদ্ধদের আকর্ষণ করতে তাদের ই-মেইলগুলোতে বার্তা পাঠাচ্ছে।

নতুন নতুন ডেটিং সাইটেরও আবির্ভাব ঘটছে। ‘কোয়ারেন্টিন টুগেদার’ নামের নতুন একটি সাইট তাদের স্লোগান দিয়েছে- ‘যখন আপনি ঘনিষ্ঠ হতে পারছেন না তখনও কাছাকাছি থাকুন।’

কম্পিউটার বিজ্ঞানের এক শিক্ষার্থী ই-মেইলে এএফপিকে বলেন, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা আমাদেরকে নতুন ও পুরাতন সম্পর্ককে অনলাইন সংযোগের মাধ্যমে আরও জোরালো করছে। তিনি মনে করেন, এ সংকটময় পরিস্থিতিতে ওকেজুমারের মতো ডেটিং সাইটগুলো অর্থবহ নতুন সম্পর্ক গড়তে সাহায্য করছে।

তবে কিছু লেখক-সাহিত্যিক এগুলোও পুরোপুরি বন্ধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। মার্কিন লেখক ম্যাট স্টোলার টুইটারে বলেন, ‘সব ধরনের অনলাইন ডেটিং সেবাগুলোও এখন বন্ধ করার সময়।

করোনাভাইরাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে অনলাইননির্ভর আকর্ষণ তৈরির চেষ্টাও করা উচিত নয়।’ করোনাভাইরাস নিয়ে ডেটিং সাইটে ঠাট্টা-রসিকতা বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন কমেডিয়ান ও লেখক ল্যান মুর।

তিনি বলেন, ‘যদি বিপজ্জনক এ সংকট পরিস্থিতি নিয়ে কেউ তামাশা করে অথবা মজা করে তাহলে আমার পরামর্শ, এসব বন্ধ করে দেয়া হোক।’

এ নারী কমেডিয়ানের ‘টিনডার লাইভ’ নামের একটি শো বাস্তব জীবনে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক তৈরিতে সাহায্য করছে বলে দাবি করেছেন তিনি। করোনাভাইরাস মানুষে মানুষে বন্ধন তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে বলেও মনে করেন মুর।

তিনি বলেন, আমি কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি, যাদের সঙ্গে টিনডার লাইভ শোতে সাক্ষাৎ করেছিলাম। করোনাভাইরাস আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে কেমন প্রভাব ফেলছে সেই বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। কিভাবে এর প্রতিকার পাওয়া যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।