বাবার হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছি বললেন খাসোগি পুত্র

সৌদি আরবের আলচিত সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দেয়ার কথা জানিয়েছেন তার ছেলে সালাহ। শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদির কনস্যুলেট পরিদর্শন করতে গিয়ে একথা জানিয়েছিলেন খাসোগির পরিবার। খবর আল জাজিরার।

এক টুইট বার্তায় সালাহ জানান, পবিত্র রমজান মাসের এই রজনীতে আমরা আল্লাহর কথা স্মরণ করি। আল্লাহ বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি ক্ষমা করে দেয় এবং পুনর্মিলন করে, তার তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরষ্কার প্রাপ্ত হবেন।

ওই টুইটবার্তায় সালাহ আরও জানিয়েছেন, আল্লাহর কথা স্মরণ করেই আমরা শহীদ জামাল খাসোগির ছেলেরা ঘোষণা করছি যে, আল্লাহর পুরষ্কার প্রাপ্তির আশায় আমরা আমাদের বাবার হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছি।

সালাহ সৌদি আরবেই থাকেন। তাঁর কাছ থেকে আসা ক্ষমার এই ঘোষণার আইনগত পরিণতি কী হবে, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। সাংবাদিক জামাল খাসোগি একসময় সৌদির রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে তিনি সৌদির রাজপরিবারের কড়া সমালোচক হয়ে ওঠেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলামিস্ট জামাল খাসোগিকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদির কনস্যুলেটের ভেতরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার লাশ কেটে টুকরো টুকরো করে গায়েব করে দেওয়া হয়। ধারণা করা হয়, খাসোগির লাশ এসিডে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে এই হত্যা সংঘটিত হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে সৌদি।

এই হত্যাকাণ্ড বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। সেসময় তুরস্ক জানায়, সৌদি আরব থেকে পাঠানো দেশটির ১৫ জন এজেন্ট এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। প্রবল চাপের মুখে সৌদি আরব জামাল খাসোগি হত্যার বিচার শুরু করার ঘোষণা দেয়। হত্যার অভিযোগে তারা ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।

গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির সরকারি আইনজীবী জানান, ১১ আসামির মধ্যে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। তিনজনকে দেওয়া হয়েছে ২৪ বছরের কারাদণ্ড। আর বাকিরা খালাস পেয়েছেন।

তবে খাসোগি হত্যায় সৌদি রাজপরিবারের সংশ্লিষ্টতা বিশেষ করে মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার জোরালো অভিযোগ উঠলেও তার ছেলে সালাহ বরাবরই সৌদি রাজপরিবারের পক্ষে কথা বলেছেন। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সালাহসহ খাশোগির ছেলেরা সৌদির কাছ থেকে বহু মিলিযন ডলারের বাড়ি এবং মাসে তাদেরকে কয়েক হাজার ডলার পান। তবে সালাহ সৌদি সরকারের সাথে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।