ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্নীতির গোমর ফাঁস করলেন পাইলট

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে দীর্ঘদিন মাঠ মাতিয়েছেন খালেদ মাসুদ পাইলট। অবসরের পর দেশের ঘরোয়া লিগগুলোতে নিয়মিত কোচিং করাতেন তিনি। তবে আচমকা এই পেশা থেকে সরে দাঁড়ান এই ক্রিকেটার। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্নীতির গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন সাবেক টাইগার অধিনায়ক।

মঙ্গলবার রাতে বিডিক্রিকটাইমের সঙ্গে এক লাইভ আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন পাইলট। সেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটের কোচিং থেকে তার সরে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হয়। উত্তরে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে বর্তমানে কোচিং করানোর পরিবেশ নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আলাপচারিতার এক পর্যায়ে পাইলট বলেন, আমার কাছে পরিবেশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কাউকে দোষারোপ করব না। কিন্তু সত্য বলতে আমাদের বেশ কিছু জায়গায় সমস্যা তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমি একজন খেলোয়াড় ছিলাম, বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলাম। আমি চাই খেলা হবে পরিষ্কার আর সেখান থেকে প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা বের হয়ে আসবে। কিন্তু আপনি যখন আগেই জানবেন যে এই দলটা চ্যাম্পিয়ন হবে সেটা কেমন!

নিজের দল নিয়েও এমন দুর্নীতির ভুক্তভোগী হয়েছেন জানিয়েছেন পাইলট। সেই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, আমি নিজেও এর ভুক্তভোগী। ধরেন দুইটা পাশাপাশি মাঠে ম্যাচ হবে, আগের রাতে বৃষ্টি হয়েছে। পাশের মাঠে ঠিকই খেলা হচ্ছে, কিন্তু বৃষ্টির কথা বলে আমাদেরটা হচ্ছে না।

পাইলট যোগ করেন, আমরা জানি রোদ পড়লেই ২-৩ ঘণ্টা পর পিচ শুকিয়ে যাবে। কিন্তু লাঞ্চের সময়েও দেখি উইকেট ভেজা, কাভার দেয়া। আমি একজন অধিনায়ক হিসেবে না হয় বাদ দিলাম, একজন মানুষ হিসাবে আপনি কিভাবে এগুলো মেনে নেবেন?

তিনি আরো বলেন, পুরো রোদের মধ্যে কাভার দিয়ে রাখায় দেখা যায় দুপুর ৩টার সময়েও পিচ একইরকম ভেজা। আমি চিন্তা করছিলাম এটা কীভাবে সম্ভব। পাশের পিচগুলো কিন্তু শুকনো। আমরা সবাই জানতাম যে সেই ম্যাচে আমাদের প্রতিপক্ষের লিগ বাঁচাতে ১ পয়েন্ট লাগতো। যদি একটা দলকে এভাবে সমর্থন করে লিগ আয়োজন করা হয় তাহলে এখানে আর কোচিং করানোর কিছু থাকে না। খেলোয়াড়দেরও তখন নিজেদের বলতে কিছু থাকে না।

দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে এর আগেও বহুবার প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু জাতীয় দলে খেলেছেন এমন ক্রিকেটারদের মাঝে পাইলটই প্রথম এভাবে সোজাসুজি সবকিছু ফাঁস করে দিলেন। এরপরও ক্রিকেট কর্তাদের ঘুম না ভাঙলে দেশের ক্রিকেটে অমাবস্যা আসন্ন।