ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের দায়ে ২৯০ জনকে চিহ্নিত

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে ব্যবহারের তুলনায় বিদ্যুৎ বিল অনেক বেশি আসছে বলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ আসে। ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের দায়ে ২৯০ জন কর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

রোববার (৫ জুলাই) বিদ্যুৎ বিল বিষয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রতিবেদন নিয়ে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব সুলতান আহমেদ এ তথ্য জানান।

চিহ্নিত কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান সচিব।

বিলম্ব ফি ছাড়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সময় জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা হচ্ছে বলে জানান বিদ্যুৎ সচিব।

সচিব বলেন, ‘করোনার মধ্যে আমাদের মিটার রিডাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং করতে পারেননি। এ জন্য এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। করোনার মধ্যে ৬০১ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জন বিদ্যুৎকর্মী মারা গেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অতিরিক্ত বিলের জন্য ডিপিডিসি একজন নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত, ৩৬টি ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। এছাড়া ১৩ জন মিটার রিডার এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটরসহ মোট ১৪ জনকে চুক্তিভিত্তিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

গরমিল থাকা বিলের প্রায় শতভাগ সমাধান করা হয়েছে জানিয়ে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, ‘একজন গ্রাহক যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন কোনভাবেই বিদ্যুৎ বিভাগ তার কাছ থেকে এর অতিরিক্ত একটি টাকাও নেবে না। এটি আমরা সবাইকে বলেছি এবং সেভাবেই কাজ হচ্ছে।‘’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের যে গ্রাহকরা আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত আছেন, তারা এক-দু’মাসের জন্য নয়, তারা সারা জীবন বিদ্যুৎ নিয়ে থাকবেন। এখানে যে অনিয়মগুলো হয়েছে আমরা মনে করি, সেগুলো সাময়িক। সেগুলো অবশ্যই আমরা সমাধান করে দিতে পারব।’

গ্রাহকদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের অতিরিক্ত বিল করায় দুঃখ প্রকাশ করে সচিব সুলতান আহমেদ বলেন, ‘আশা করি, আপনাদেরকে পূর্ণ আস্থায় আমরা অতি সত্ত্বর নিয়ে আসতে পারব। গ্রাহক কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।’

সবমিলিয়ে ৬২ হাজার ৯৬ বিদ্যুৎ বিলে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

৬টি বিতরণ কোম্পানি হলো- বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো), নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজিপাডিকো)।

পিডিবির মোট গ্রাহক ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৫১৫ জন, অভিযোগ পাওয়া গেছে ২ হাজার ৫৮২টি। আরইবির মোট গ্রাহক ২ কোটি ৯০ লাখ, অভিযোগ পাওয়া গেছে ৩৪ হাজার ৬৮১টি। ডিপিডিসির মোট গ্রাহক ৯ লাখ ২৬ হাজার ৬৮৯, অভিযোগ পাওয়া গেছে ১৫ হাজার ২৬৬টি। ডেসকোর মোট গ্রাহক ১০ লাখ, অভিযোগ পাওয়া গেছে ৫ হাজার ৬৫৭টি। নেসকোর মোট গ্রাহক ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭৮ জন, অভিযোগ পাওয়া গেছে ২ হাজার ৫২৪টি। ওজিপাডিকোর মোট গ্রাহক ১২ লাখ ১৩ হাজার, অভিযোগ পাওয়া গেছে ৫৫৫টি।

সংবাদ সম্মেলনে বিতরণ কোম্পানিগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।