যশোর শিশু ও কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর হত্যার ঘটনায় কর্মকর্তাসহ ৫ জন আটক

যশোর শিশু ও কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর হত্যার ঘটনায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন শনিবার বেলা ১২ টায় পুলিশ সুপার কার্যকালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেসবিফিং আটকের তথ্য জানান।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় ১৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এই ৫ জনের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়ে প্রমান পাওয়া গেছে। সহকারী পরিচালক মাসুদকে এর আগে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- কেন্দ্রের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, প্রবেশন অফিসার মুশফিকুর রহমান, শরীরচর্চা শিক্ষক ওমর ফারুক ও কারিগরি শিক্ষক শাহানুর আলম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের হেড গার্ড নুরুল ইসলাম বন্দি হৃদয়ের কাছে চুল কাটতে যায়। কিন্তু হৃদয় তাকে চুল কাটতে রাজি না হওয়ার কারণেরই এ ঘটনার সূত্রপাত বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। পরে নুরুল ইসলাম তার উর্দ্বোতন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করে। একই সাথে হৃদয় ও আরেক বন্দি পাভেলকে নিয়ে মাদকসহ সমকামিতার অভিযোগ আনেন তিনি। এসব কথা নাইম নামের আরেক বন্দি শুনে হৃদয়ের কাছে বলে। হৃদয় জানার পর ৩ আগস্ট নুরলকে বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনার ১০ দিন পর ১৩ আগস্ট কর্তৃৃপক্ষ মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয় জড়িতদের সায়েস্তা করতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বন্দিদের শনাক্ত করে প্রতিষ্ঠানের ডরমিটরিতে ডেকে এনে বেধড়ক মারপিট করে। এসময় প্রতিষ্ঠানের আরো ৭/৮ জন কর্তৃপক্ষের অনুগত পুরাতন বন্দি কর্তৃপক্ষের সাথে যুক্ত হয়ে নির্মম ভাবে তাদেরকে মারপিট করে ফেলে রাখে। তাদেরকে চিকিৎসা সেবাও দেয়া হয়নি। এরমধ্যে একজন মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। এসময় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পরে পুলিশ সুপার নিজে ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখতে পায় অন্তত ১৫/১৬ জন বন্দি মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে ডরমিটরে শুয়ে কাতরাচ্ছে। পুলিশ ভ্যানে করে তাদেরকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে আরো দুইজনের মৃত্যু হয়।

পুলিশের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, এ ঘটনায় ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়। এছাড়া আরো নয়জনের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ রকিবুল হাসান বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে। আরো নতুন তথ্য আসছে। জড়িতরা কেউই ছাড় পাবেনা।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম, গোলাম রব্বানীসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।