যমুনার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই, ভাঙনে বিলীন হচ্ছে দক্ষিণ চৌহালি

গত ৪ দিন ধরে সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর পানি বেড়ে এখন তা বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর পানি বেড়েছে ৩৩ সেন্টিমিটার। অপরদিকে একই সময়ে যমুনা নদীর কাজিপুর পয়েন্টে পানি বেড়েছে ২৭ সেন্টিমিটার। বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, পানি আরো বাড়বে। এদিকে দফায় দফায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করায় সিরাজগঞ্জ জেলার যমুনা নদী তীরবর্তী পাঁচটি উপজেলার মানুষের মাঝে আবারও বন্যার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর পানি ৩৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অপরদিকে, কাজিপুর পয়েন্ট যমুনা নদীর পানি ২৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার মাত্র ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরো বাড়বে।

এদিকে, যমুনার পানি বাড়তে থাকায় ভাঙনের কবলে পড়েছে সিরাজগঞ্জের দুর্গম চৌহালি উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা। তীব্র ভাঙনে ধীরে ধীরে বিলীন হচ্ছে দক্ষিণ চৌহালির বিস্তীর্ণ অঞ্চল।

স্থানীয়রা জানান, আগস্ট মাসের শেষ দিক থেকেই দক্ষিণ চৌহালির বাঘুটিয়া ও খাসপুখুরিয়া ইউনিয়নে ভাঙন শুরু হয়। এরই মধ্যে ওই দুটি ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর, শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে মানুষ বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। গত কয়েক সপ্তাহ আগেই এসব অঞ্চলের মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছিলেন। এ অবস্থায় ভাঙন আতঙ্কে যমুনা পাড়ের জনগণ চরম বিপাকে পড়েছেন। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাসপুখুরিয়া থেকে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চর বিনানুই পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়। যমুনার পানি দফায় দফায় হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে ভাঙনের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়।

বর্তমানে আবারো পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙনের প্রকোপ বেড়েছে। এতে প্রায় কয়েক শত বসতভিটা, ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদরাসা, তাঁত কারখানাসহ পাকা রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে খাসপুখুরিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চর বিনানুই হাটাইল, চর নাকালিয়া, ভুতেরমোড়, খাসপুখুরিয়া, মেটুয়ানী এলাকার পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। একই সঙ্গে কয়েক শত বিঘার ফসলি জমিও বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে বহু ঘরবাড়ি ও স্থাপনা।